ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

এমসি রিপোর্ট
বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২ | ৫:৪৭ অপরাহ্ণ | 846 বার পঠিত
২২২ বছর পর হজ প্রথম বাতিল হতে পারে

হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। হজে আর্থিক ও কায়িক শ্রমের সমন্বয় রয়েছে। পবিত্র হজের দোয়া ও ফজিলত অনেক। অন্য কোনো ইবাদতে হজের মতো এই দুইটি একসঙ্গে পাওয়া না যায় না। মহান রাব্বুল আলামিন সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিমের উপর দ্রুত হজ সম্পাদন করা ফরজ করেছেন। ইসলামে হজের দোয়া ও ফজিলত যথেষ্ট। পবিত্র রমজান মাসে ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব অনেকগুন বেশি।

হজ মুসলিম উম্মাহর গর্ব। নানা জাতি ও বর্ণের মুসলিমদের ঐক্য ও সাম্যের প্রতীক। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালনে সৌদি গমন করেন। অগণিত কিংবা নির্ধারিত— যত সংখ্যক হাজি-ই সেখানে যান, তারা আল্লাহপ্রেমের পাঠ চুকিয়ে রাসূলপ্রেমের মশগুল থাকেন। মহা সৌভাগ্য ও পূণ্যের মিছিলে নিজেদের নাম লেখান।

হজ ও ওমরাহ কী?

স্বাভাবিকভাবে ‘হজ’ অর্থ মহৎ কাজের ইচ্ছে করা। পারিভাষিকভাবে হজ বলে, হজের নিয়তসহ ইহরাম ধারণ করে— নির্দিষ্ট দিনে আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ও কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৪৫৪)

ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

আর ‘ওমরাহ’ অর্থ পরিদর্শন করা। ওমরাহর নিয়তে ইহরাম ধারণ করা, এরপর তাওয়াফ ও সাঈ করে মাথা মুণ্ডন করে ইহরামমুক্ত হওয়াকে ওমরাহ বলে। (ফাতহুল বারি, খণ্ড: ০৩, পৃষ্ঠা: ৫৯৭)

হজের সওয়াব ও ফজিলত

আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়।’ (বুখারি, খণ্ড: ০১, পৃষ্ঠা: ২০৬)

ওমরাহ ও হজ অভাব দূর করে

আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা হজ-ওমরা সঙ্গে সঙ্গে করো। কেননা, এ দুটি দারিদ্র্য ও গোনাহ এভাবে দূর করে, যেভাবে হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। আর মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৮৭)

আরও পড়ুন : পবিত্র হজের দোয়া ও ফজিলত

এমন কিছু আমল আছে যার মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা হজ এবং উমরার সমান সওয়াব দেবেন। রাসূল সা:-এর হাদিসের ভাণ্ডার থেকে সেরকম আটটি আমলের কথা উল্লেখ করছি।

১. প্রথম আমল হলো ঐকান্তিক ইচ্ছা ও সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ। অর্থাৎ যে ব্যক্তি হজ অথবা উমরাহ করার জন্য অন্তরের গভীর থেকে প্রকৃত অর্থেই ইচ্ছা লালন করেছেন এবং তার জন্য বাস্তবে পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন কিন্তু কোনো কারণে তার হজ বা উমরাহ করা হয়ে ওঠেনি, এই ব্যক্তিকে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা হজ বা উমরাহ না করা সত্ত্বেও হজ ও উমরার সমান সওয়াব দান করবেন।

ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

নবীজী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো নেককাজের দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করে কিন্তু কোনো কারণে সেটি করতে পারে না, তার জন্য আল্লাহ তায়ালা সে কাজের পূর্ণ সওয়াব লিখে দেন।’ (বুখারি-৬৪৯১)

বুখারি ও মুসলিম একযোগে বর্ণনা করেছে, তাবুক যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তনের পর নবী সা: যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবিদের বলেছিলেন, বহু লোক মদিনায় অবস্থান করেছিল, তোমাদের সাথে সশরীরে যুদ্ধে যোগদান করতে পারেনি; তারা তোমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে সশরীরে না থাকলেও বাস্তবিক অর্থে ছিল। তারা তোমাদের মতো সওয়াব অর্জন করেছে। কারণ তারা তোমাদের সাথে বের হওয়ার জন্য প্রচণ্ড ইচ্ছা লালন করেছিল। তাদের ইচ্ছায় কোনো খাদ ছিল না। তারা বাস্তবমুখী পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন। শুধু অসুস্থতা বা গ্রহণযোগ্য কোনো ওজরের কারণে তারা যোগ দিতে পারেনি। আল্লাহ তায়ালা তাদের মনের ইচ্ছার কারণে তাদেরও তোমাদের সমান সওয়াব দান করবেন।

আমাদের দেশে প্রতি বছর হজের সময় অনেকে হজে যেতে না পেরে কান্নাকাটি করেন, মন খারাপ করেন। কান্নাকাটি করা তাদের ঈমানের পরিচায়ক, হজের প্রতি আগ্রহ এবং ভালোবাসার আলামত। কিন্তু এই কথা চিন্তা করে তারা খুশি হতে পারেন যে, ঐকান্তিক ইচ্ছার কারণে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে হজের সমান সওয়াব দান করবেন।

ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

২. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করার জন্য যে ব্যক্তি বাসা থেকে অজু করে বের হন, এই ব্যক্তিকেও আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা হজ করার সমান সওয়াব দান করবেন। এক হাদিসে নবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার বাসা থেকে ফরজ সালাতের জন্য পবিত্রতা অর্জন করে বের হলো, তার প্রতিদান হলো ইহরামধারী হাজীর সমতুল্য।’ (সুনান আবু দাউদ-৫৫৮)

৩. ফজরের ফরজ সালাত আদায় করার পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত জিকির-আসকার করা এবং সূর্যোদয়ের পর ইশরাক নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়া। এই আমলের বিনিময়েও আল্লাহ তায়ালা হজ এবং উমরার সমান সওয়াব দান করবেন। নবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতের সাথে আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকির করল, সূর্যোদয়ের পর দুই রাকাত সালাত আদায় করল তার জন্য রয়েছে পরিপূর্ণ হজ ও উমরার সওয়াব।’ (সুনান তিরমিজি-৫৮৬)

৪. মদিনার মসজিদে কুবায় সালাত আদায় করা। এ বিষয়ে সুনানে তিরমিজির এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে নবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার বাসায় পবিত্রতা অর্জন করে মসজিদে কুবায় এসে কোনো সালাত আদায় করল, তার জন্য রয়েছে এক উমরার সওয়াব।’ (সুনান ইবনে মাজাহ-১৪১২)

৫. রমজান মাসে উমরাহ করা। রমজান মাসে উমরাহ করার ফজিলত প্রসঙ্গে সহিহ বুখারির এক হাদিসে নবী সা: বলেছেন, ‘রমজান মাসে একটি উমরাহ করা আমার সাথে হজ করার সমতুল্য।’ (বুখারি-১৮৬৩)
অর্থাৎ একটি উমরাহ শুধু হজের সওয়াব পাইয়ে দেবে তা নয়, বরং নবী সা:-এর সাথে হজ করার সওয়াব হবে।

৬. হাজী সাহেবরা যখন হজ করতে যাবেন, তখন তাদেরকে হজে যাওয়ার জন্য যা প্রয়োজন তা দিয়ে তাকে হজের জন্য প্রস্তুত করে দেয়া। তাকে টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করা অথবা হজে যাওয়ার পরে তার অগোচরে তার পরিবারের দায়িত্ব নেয়া। এ আমলের মাধ্যমেও আমরা হজের সমান সাওয়াব পেতে পারি। এ বিষয়ে নবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো হাজীকে প্রস্তুত করে দিলো অথবা তার পরিবারের অভিভাকত্ব করল, সে ব্যক্তি হজকারীর সমতুল্য সওয়াব পাবে; হজকারীর সওয়া থেকে কমানো হবে না।’ (সহিহ ইবনে খুজাইমাহ-২০৬৪)

৭. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করা। সহিহ বুখারি এবং মুসলিমের এক হাদিসে এসেছে, নবী সা:-এর কাছে এসে গরিব সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের মধ্যে যারা ধনী, তারা আমাদের মতো সালাত-সিয়াম আদায় করে। তদুপরি তাদের আর্থিক সামর্থ্য থাকার কারণে তারা হজ করেন এবং দান-সদকা করেন। অথচ এগুলো আমরা করতে পারি না। আমাদেরকে এমন কিছু আমলের কথা বলে দিন, যে আমলের মাধ্যমে আমরা তাদের সমান মর্যাদা পাব। তখন নবী সা: তাদেরকে বলছিলেন, ‘তোমরা প্রত্যেক পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পড়বে; তাহলে তারা তাদের অর্থব্যয় করে হজ করে এবং দান করে যে সওয়াব অর্জন করে, সেরকম সওয়াব তোমরাও অর্জন করতে পারবে।’

৮. যে ব্যক্তি কোনো ভালো কিছু শেখা বা শেখানোর জন্য বাড়ি থেকে মসজিদের দিকে বের হয়, তাকেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা হজের সমান সওয়াব দান করবেন। এ বিষয়ে রাসূল আকরাম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি একমাত্র জ্ঞানার্জনের জন্য কিংবা ভালো কিছু শিক্ষাদানের জন্য মসজিদের দিকে রওনা হয়, তার জন্য রয়েছে পূর্ণ হজের সাওয়াব।’ (তাবরানি)

উপরিউক্ত আটটি আমল খুবই সহজ। মোটেও কষ্টসাধ্য নয়। এই আমলগুলোর মাধ্যমে অর্থব্যয় করে সশরীরে হজ না করেও হজ এবং উমরার সমান সাওয়াব অর্জন করতে পারি। শুধু একটু খেয়াল করে, যত্ন সহকারে এ আমলগুলোকে যথাযথভাবে পালন করলেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে সেই মর্যাদা দান করবেন।

তবে মনে রাখতে হবে, এই আমলগুলো করার মাধ্যমে হজ এবং উমরার সওয়াব পাওয়া গেলেও হুবহু সশরীরে হজ করার মর্যাদা অর্জিত হবে না। তাছাড়া এ আমলগুলো করলেই হবে, সশরীরে হজ ও উমরাহ করার প্রয়োজন নেইÑ ব্যপারটি এমন নয়। বরং হজ উমরার সওয়াব পাওয়া আর হজ উমরার দায় থেকে মুক্তি পাওয়া ভিন্ন বিষয়। সুযোগ পেলে অবশ্যই হজ ও উমরাহ করতে হবে। তবে হজ ও উমরাহ করার তাওফিক যদি নাও হয়, তাহলে উপরিউক্ত আমলগুলো করার মাধ্যমে হজ ও উমরার সমান বিপুল সওয়াবের অধিকারী হতে পারি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে অধিক পরিমাণ আমল করার তাওফিক দান করুন।

ওমরাহ পালনের ফজিলত

عَنْ أبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهُ: أنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم قَالَ: «العُمْرَةُ إِلَى العُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا، وَالحَجُّ المَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلا الجَنَّةُ». متفق عليه.

১) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সবকিছুর কাফফারা। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত। ( বুখারী ও মুসলিম )

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُما قَالَ: قَالَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم: «تَابعُوا بَيْنَ الحَـجِّ وَالعُمْرَةِ فَإِنَّـهُـمَا يَــنْــفــِيَــانِ الــفَــقْــرَ وَالــذنــُوبَ كَمَا يــَنْــفِــي الــكِــيــرُ خــَبــَث الــحَــدِيــدِ». أخرجه النسائي.

২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেনঃ তোমরা বার বার হজ্জ ও ওমরাহ আদায় কর, কেননা এ দুটো দরিদ্রতা ও গুনাহকে সে ভাবে মুছে ফেলে, যে ভাবে কর্মকারের হাওয়া দেয়ার যন্ত্র লোহার ময়লাকে দূর করে থাকে। (নাসায়ী- হাদীস সহীহ)

রমজানে ওমরা করলে হজ করার সওয়াব

পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এ সেই রমজান, যে মাসে মানবের হেদায়েতের জন্য কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে।’ (সূরা বাকারা : ১৮৫)।

এ মাসের সিয়ামকে আল্লাহ তায়ালা ফরজ করে বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে সে যেন সিয়াম পালন করে।’ (সূরা বাকারা : ১৮৫)। হজরত তালহা বিন উবাইদুল্লাহ বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সা.)কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার ওপর আল্লাহ কী কী রোজা ফরজ করেছেন, তা আমাকে বলে দিন। উত্তরে তিনি বললেন, ‘রমজানের রোজা।’ লোকটি বলল, এছাড়া অন্য কিছু কি আমার কর্তব্য আছে? তিনি বললেন, না, তবে যদি তুমি নফল রোজা রাখ, তা হলে ভিন্ন কথা।’ (বোখারি : ১৮৯১)। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য এ মাসের সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। (নাসাঈ)।

ফলে ফরজ সিয়াম রমজানে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা আরও বেড়ে গেছে।
এ মাস এলে রাসুলে করিম (সা.) অতিশয় আনন্দিত হয়ে সাহাবাদের সুসংবাদ দিয়ে বলতেন, তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। (নাসাঈ)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, জাকাত আদায় করল, রমজানে সিয়াম পালন করল, তার জন্য আল্লাহর হুকুম হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়া। (বোখারি)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রমজানে প্রত্যেক মোমিন মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। (বাযযার, সহি আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব : ৯৮৮, মুসনাদে আহমাদ : ৭৪৫০)। এ মাসের প্রতি রাত ও দিনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু মানুষকে দোজখ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব, মুসনাদে আহমাদ : ৭৪৫০)।

এ মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহু গুণে বাড়িয়ে দেয়া হয়। যেমন- হাদিসে এসেছে, রমজানে ওমরা করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বরং, রমজানে ওমরা করা আল্লাহর রাসুলের সঙ্গে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। এমনিভাবে সব ইবাদত-বন্দেগিসহ সব সৎ কাজের প্রতিদান কয়েক গুণ বেড়ে যায়

এ মাসে আমলের মাধ্যমে অনেক বেশি মুনাফা লাভ করা যায়। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক আনসারি মহিলাকে বললেন, তুমি কেন আমাদের সঙ্গে হজ করতে যাওনি? তিনি বললেন, আমাদের পানি বহনকারী দুটি মাত্র উট রয়েছে। একটিতে আমার ছেলের বাবা (স্বামী) ও তার ছেলে হজ করতে গিয়েছেন, অন্যটি পানি বহনের জন্য আমাদের কাছে রেখে গিয়েছেন। তিনি বলেন, রমজান এলে তুমি ওমরা করবে। কেননা এ মাসের ওমরা একটি হজের তুল্য। সহিহ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, রমজানে ওমরা একটি হজের তুল্য। (বোখারি : ১৭৮২, মুসলিম : ১২৫৬, মুসনাদে আহমাদ : ২০২৫)।

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, উম্মে মাকিল (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি তো হজ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু আমার উটটি দুর্বল। তিনি বললেন, তুমি রমজানে ওমরা করো। কেননা রমজানে ওমরা (সওয়াব হিসেবে) হজের তুল্য। (মুসনাদে আহমাদ : ২৭২৮৫)। হে আল্লাহ আমাদের রমজানে ওমরা করার তৌফিক দান করুন।

‘হজ’ কেবল সামর্থ্যবানদের ওপর ফরজ করা হয়েছে।

ইসলামে হজের গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, এক ওমরাহ থেকে পরবর্তী ওমরাহর মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের কাফফারাস্বরূপ। আর জান্নাতই মকবুল হজের পুরস্কার। (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩)

বিশ্বনবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে ‘সর্বাধিক উত্তম আমল কোনটি?’ তিনি বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর ইমান আনা। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এরপর কোনটি?’ তিনি বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বলেন, হজে মাবরুর বা মকবুল হজ করা। (বুখারি, হাদিস : ১৪২৯)

হজে যাওয়ার ফজিলত

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি হজ, ওমরাহ অথবা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয়, তারপর পথেই তার মৃত্যু হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তাকে গাজি, হাজি ও ওমরাহকারীর সওয়াব দান করবেন। (শুআবুল ঈমান)

অন্য হাদিসে এসেছে : যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হয়, তারপর তার মৃত্যু এসে যায়, আল্লাহ তাকে কিয়ামত পর্যন্ত হজের সওয়াব দান করবেন। আর যে ব্যক্তি ওমরাহর উদ্দেশ্যে বের হয়, তারপর তার মৃত্যু হয়, আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামত পর্যন্ত ওমরাহর সওয়াব দান করবেন। (মুসনাদে আবি ইয়ালা : ৬৩৫৭)

হজ মানুষের পাপ মোচন করে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি কোনোরূপ অশ্লীল কথা বা গুনাহর কাজে লিপ্ত না হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে হজ সম্পন্ন করে, সে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে। (বুখারি, হাদিস : ১৫২১)

হজ নারী ও দুর্বলদের জন্য জিহাদস্বরূপ

রাসুল (সা.) বলেন, দুর্বলদের জিহাদ হচ্ছে হজ। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯০২)

অন্য হাদিসে এসেছে : রাসুল (সা.) বলেন, বৃদ্ধ, শিশু, রোগী ও নারীদের জিহাদ হচ্ছে হজ ও ওমরাহ। (সুনানে নাসায়ি : ২৬২৬)

আয়েশা (রা.) মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। সুতরাং আমরা (নারীরা) কি জিহাদে শরিক হব?’ তিনি বলেন, না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হচ্ছে হজে মাবরুর। (বুখারি, হাদিস : ১৫২০)

হজযাত্রীরা আল্লাহর প্রতিনিধি

ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, বিশ্বনবী (সা.) বলেন, আল্লাহর পথের সৈনিক, হজযাত্রী ও ওমরাহযাত্রীরা আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন এবং কিছু চাইলে তা তাদের দান করেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৯৩)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র হজ করার সামর্থ্য ও তাওফিক দান করুন। আমিন।

হজের উপকারিতা

হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। এটা ইসলামের বড় ইবাদত হওয়া ছাড়াও এর বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। কুরআনুল কারীমে এ ব্যাপারে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আল্লাহ্র বাণী, ‘যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে’ (হজ ২২/২৮)।

এ আয়াতে বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করে ধর্মীয়, দৈহিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক, দাওয়াতী, ইলমী (জ্ঞানগত) ও একতা-সংহতির উপকারিতাকে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

ইসলামে হজের দোয়া ও ফজিলত

১. দ্বীনি (ধর্মীয়) উপকারিতা

ক. মুখলিছ (একনিষ্ঠ) হাজি গোনাহ থেকে পাক-সাফ বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়, যা পূর্বোক্ত হাদিসে উল্লিখিত হয়েছে।
খ. মক্কায় অবস্থানের সময় মসজিদে হারামে সালাত আদায় করার সৌভাগ্য হয়। যেখানে সালাত আদায়ে অন্যান্য মসজিদের চেয়ে ১ লক্ষ গুণ ছওয়াব বেশি হয়।
গ. মক্কায় অবস্থানকালে কাবার তওয়াফ করতে থাকার সৌভাগ্য হয়। তওয়াফ এমন ইবাদত, যা ঐ জায়গা ব্যতীত অন্যত্র আদায় করা সম্ভব হয় না।
ঘ. অন্তরে গোনাহের যে মরিচা পড়ে, তা আল্লাহ্র ঘর দর্শন ও তার পার্শ্বে কিছু দিন অতিবাহিত করার মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায় এবং মানুষের মাঝে উত্তম কাজের আগ্রহ অত্যধিক বৃদ্ধি পায়।
ঙ. হজের সময় প্রতি পদক্ষেপে পৃথিবীর সমগ্র মানবতার মহান তাওহীদবাদী ও কা‘বার পুনঃনির্মাণকারী ইবরাহীম (আ.), তাঁর পরিজন হাজেরা ও পুত্র ইসমাঈল (আ.)-এর পবিত্র জীবনের চিত্র অন্তরে চিত্রিত হয়। যা দ্বীনের উপর অটল থাকতে সহায়ক হয় এবং মানুষের মাঝে দীপ্তিমান জীবনের মশালবাহী বা দিকনির্দেশক হওয়ার জাযবাহ তৈরি করে।
চ. হজের সময় মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারার কিছু ঐতিহাসিক স্থান দর্শনের সুযোগ হয়, যাতে ইসলামের সূচনা লগ্নের ইতিহাস স্মৃতির ফলকে বদ্ধমূল হয়ে যায়। এর ফলে ঈমানে সজিবতা, আস্থা এবং নিশ্চিত বিশ্বাসে দৃঢ়তা পয়দা হয়।
ছ. কাবা ঘর ও অন্যান্য পবিত্র নিদর্শন এবং হজের বিশাল জমায়েত-সমাবেশ দেখে ইসলামের সত্যতা অন্তরে বদ্ধমূল হয়ে যায়। হজের এই ধর্মীয় উপকারিতা ছাড়াও অন্যান্য বহু উপকারিতা রয়েছে।

২. দৈহিক উপকারিতা

হজের সফরে এবং হজ চলাকালীন সময়ে হাজিদেরকে শারীরিক পরিশ্রমও করতে হয়। অনেক আরাম প্রিয় ও সওয়ারীতে অভ্যস্ত লোকদেরকেও অধিকাংশ সময় পদব্রজে চলতে হয়। যা তার দৈহিক সুস্থতার উপরে সুপ্রভাব ফেলে। তদ্রƒপ মক্কায় অবস্থানকালে জমজমের পানি পান করাতেও স্বাস্থ্য ভালো হয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে বহু দুরারোগ্য ব্যাধি উপশম হয়ে যায়। যেরূপ বিভিন্ন ঘটনা থেকে জানা যায়।

ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

৩. আর্থিক উপকারিতা

হজের দৃঢ় নিয়তকারী কোন ব্যক্তি যদি হজ চলাকালীন সময়ে অবসরে কোন ব্যবসা করতে চায় এবং ইসলামী নিয়ম-কানুন মোতাবেক ব্যবসা করে, তাহলে ইসলাম সেক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করাতে তোমাদের কোন পাপ নেই’ (বাক্বারাহ ২/১৯৮)। এখানে ‘অনুগ্রহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক উপকারিতা। সূরা হজের ২৭ ও ২৮নং আয়াতে হজ সম্পর্কিত বিধান ঘোষণার সাথে ইবরাহীম (আ.)-এর নিকট তার উপকারিতা ও লাভজনক দিকও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন এরশাদ হয়েছে, ‘আর মানুষের নিকট হজের ঘোষণা কর, তারা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রের পিঠে, তারা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে’ (হজ ২২/২৭-২৮)।

ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

উপকারের তালিকায় মুফাসসিরগণ দ্বীনি ও আর্থিক উপকারিতা উভয়ই উল্লেখ করেছেন যে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কারবার দ্বারা দুনিয়াবী সচ্ছলতা অর্জিত হতে পারে।

ইসলামে হজের দোয়া ও ফজিলত

৪. সাংস্কৃতিক উপকারিতা

হজ যেহেতু বিশ্বের অদ্বিতীয়, অনন্য ও বিশাল জনসমাবেশ, যাতে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক এসে মক্কায় সমবেত হয়। কেউ আরব, কেউ অনারব, কেউ প্রাচ্য, কেউ পাশ্চাত্য থেকে আগমন করে। কেউ কালো, কেউ সাদা, কোন দেশের অধিবাসী দীর্ঘকায় শক্তিশালী, কোন দেশের নাগরিক খর্বকায় ও দুর্বল। এ সমস্ত লোকের বর্ণ-গোত্র, ভাষা ও সাংস্কৃতি ভিন্নতর হওয়া সত্ত্বেও একই কেন্দ্রে সমবেত হয়। এ অবস্থায় লোকেরা একে অপরের তাহযীব-তামাদ্দুন, সভ্যতা-সংস্কৃতি, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতি-নীতি, আকার-আকৃতি, অভ্যাস-প্রকৃতি, খাদ্য-পানীয় প্রভৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়। এ সময় সুচতুর হজকারী ইচ্ছা করলে অন্যদের স্বভাব-প্রকৃতি, রীতি-পদ্ধতি, সভ্যতা-সংস্কৃতিতে নিজেকে ভূষিত করতে পারে। আর অন্যের উত্তম গুণাবলী গ্রহণ করে নিজেকে আরো সুন্দর ও পরোপকারী মানুষে পরিণত করতে পারে।

হজের গুরুত্ব ও ফজিলত

৫. ঐক্য-সংহতির উপকারিতা

হজের বিশাল সমাবেশে ভিন্ন বর্ণ-গোত্র, স্বতন্ত্র ভাষা, পৃথক সভ্যতা-সংস্কৃতির মানুষ একত্রিত হয়। যা মূলত ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ও সাম্যের সুস্পষ্ট ও শক্তিশালী প্রকাশ। একজন হাজি ইউরোপের কোন উন্নত দেশের, কেউ আফ্রিকার পশ্চাৎপদ দেশের, কেউবা এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক। সবাই এক সাথে কাবা ঘরের তাওয়াফ করে, ছাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করে, আরাফায় একত্রে অবস্থান, মুযদালিফার উদ্দেশ্যে এক সাথে যাত্রা, এক সাথে মিনায় অবস্থান ও কংকর নিক্ষেপ এবং হজের সকল রুকন মিলে মিশে পালন করে। মসজিদে হারামে একে অপরের সাথে মিলে সালাত আদায় করে। হজের সমস্ত কর্মকা- ও ইবাদত আদায়ের ক্ষেত্রে কারো উপরে কারো মর্যাদা ও প্রাধান্য নেই। সবাই পরস্পরের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখে এবং একে অপরকে সম্মান ও সেবা করার প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এটা এমনই একতা বা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ফায়েদা যা কেবল হজের সমাবেশকালে অর্জিত হয়।

ওমরাহ হজের ফজিলত ও সওয়াব

৬. ইসলামী (জ্ঞানগত) ও দাওয়াতী উপকারিতা

হজের ইলমী ও দাওয়াতী বহু উপকারিতা সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত। বিশেষত বিদ্বানগণের জন্য হজের এ বিশাল সমাবেশ কোন শিক্ষা সম্মেলন ও সেমিনার অপেক্ষা কোন অংশে কম নয়। এখানে সারা পৃথিবীর বিদ্বানগণ একত্রিত হন। একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ করে ধর্মীয় বিষয় ও ফিক্বহী মাসআলা সম্পর্কে পারস্পরিক চিন্তাধারা আদান-প্রদান করতে পারেন এবং একে অপরের নিকট থেকে ইলমী উপকার লাভ করতে পারেন। যে যুগে বর্তমান সময়ের মত গ্রন্থ মুদ্রণ ও প্রকাশের ব্যাপকতা ছিল না এবং শিক্ষা-দীক্ষারও আরামদায়ক মাধ্যম বিদ্যমান ছিল না, তখন দুনিয়ার বিদ্বানগণের জন্য হজের মৌসুমই সমবেত হওয়ার ও সাক্ষাতের মাধ্যম ছিল। ইতিহাসের পাতায় ১০টি এমন ঘটনা পাওয়া যায়, যাতে ঐ ধরনের শিক্ষা সমাবেশের বর্ণনা রয়েছে।

ইসলামে পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ফজিলত

ইলমী উপকারিতার সাথে সাথে হজের দাওয়াতী ফায়েদাও সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত। হজের সময় হাজিগণের ধর্মীয় বিষয় এমন অনেক বিষয়ের জ্ঞান লাভ হয়, যে বিষয়ে তাদের জ্ঞান ছিল না। এ সময়ে সউদি সরকার হাজিদের মাঝে দাওয়াত-তাবলীগ এবং তাদেরকে ধর্মীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা দান করার জন্য তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে। সকল দেশ ও এলাকার বিভিন্ন ভাষার বিদ্বান ও মুবাল্লিগগণের দল জায়গায় জায়গায় দিক নির্দেশনার জন্য প্রস্তুত থাকেন। বিশেষ করে মুসলমানদের আক্বীদা ও আমল সংশোধনের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়। যদি কোন হাজি একনিষ্ঠতার সাথে ঐসব প্রোগ্রাম থেকে উপকার লাভের ইচ্ছা করে এবং হজের সফরকে পিকনিক এবং পর্যটন ও প্রমোদ বিহারের প্রোগ্রাম হিসাবে গ্রহণ না করে নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করে তাহলে নিঃসন্দেহে সে অতি বড় উপকার লাভ করতে পারবে। এছাড়াও (উপরে বর্ণিত উপকারিতা ছাড়াও) হজের আরো নানা ধরনের উপকারিতা-ফায়েদা ও লাভ রয়েছে, যা দূরদর্শীদের দৃষ্টির অন্তরালে নয়।

প্রিয় পাঠক, শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ক সর্বশেষ আপডেট পেতে মুক্ত ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে লাইক দিন। লিঙ্ক : https://www.facebook.com/Muktocampus

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৬ মাসের মধ্যে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগের নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধএইচএসসি ২০২২ ফরম পূরণের সময় বাড়ল