দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

এমসি রিপোর্ট
সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১:৪২ অপরাহ্ণ
মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার জানান, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আজই জারি হতে পারে।

রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এই পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।

সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী ছিল না।

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনের জন্য সংসদের সভা বা ভোটের প্রয়োজন হয়নি।

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

এর আগে, রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। গতকাল রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৮ সালে পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। পরের বছর পাবনার শহিদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনকারী তিনি।

চুপ্পু জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামরিক আইনের সাত ধারায় আটক হয়েছিলেন তিনি। সেখানে প্রায় তিন বছর কারারুদ্ধ ছিলেন সাহাবুদ্দিন।

পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে বিচার বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। ওই সময় হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনাও ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন’ গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু।

২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত জীবনে প্রথম দিকে সাংবাদিকতাও করেছেন। দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংকের কথিত পদ্মাসেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করা সাহাবুদ্দিন চু্পপু অভিযোগটি মিথ্যা ও অন্তঃসারশূন্যতা প্রমাণে সমর্থ হন। তার দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন কানাডা কোর্ট কর্তৃক সমর্থিত হয়।

চুপ্পু আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের পিতা এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সাবেক যুগ্ম সচিব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চতুর্থ ধাপের ফল ২০২৩
পরবর্তী নিবন্ধনতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস চূড়ান্ত: শিক্ষামন্ত্রী