৮২ বছরে পা রাখলেন কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক

রাবি প্রতিনিধি:
রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৫:৪১ অপরাহ্ণ | 169 বার পঠিত
হাসান আজিজুল হককে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর

ছোটগল্পের জাদুকর ও প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ৮১ পেরিয়ে ৮২ বছরে পা রাখলেন। আজ ২রা ফেব্রয়ারি (রবিবার) তাঁর ৮২তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত বাংলার বর্ধমানের যবগ্রামে তাঁর জন্ম। ছেলেবেলাটা তিনি নিজ গ্রামেই কাটিয়েছেন। ১৯৫৪ সালে যবগ্রাম মহারাণী কাশিশ্বরী ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৫৬ সালে খুলনার দৌলতপুরের ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।

এ সময় তিনি ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ফলে তৎকালীন পাকিস্তান প্রশাসনের নির্যাতন ভোগ করতে হয় তাকে। এরপর তিনি রাজশাহী কলেজে এসে ভর্তি হন। ১৯৫৮ সালে এই কলেজ থেকে দর্শনে সম্মানসহ স্নাতক ও ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৭৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা করেন। মূলত ষাটের দশক থেকেই ছোটগল্পকার হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন হাসান আজিজুল হক। তবে ১৯৫৪ সালে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার পরই লিখে ফেলেন প্রথম উপন্যাস। ১৯৫৭ তে লেখেন উপন্যাস শামুক। যা ২০১৫ সালের বই মেলায় প্রকাশিত হয়।

এরপর হাসান আজিজুল হক উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী রচনা লিখে দেশের সাহিত্যাঙ্গনে নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন। গল্পগ্রন্থ সমুদ্রের স্বপ্ন, শীতের অরণ্য কিংবা উপন্যাস আগুনপাখি তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়।হাসান আজিজুল হকের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে আত্মজা ও একটি করবী গাছ, জীবন ঘষে আগুন, পাতালে হাসপাতালে, নামহীন গোত্রহীন, চলচিত্রের খুঁটিনাটি, মা মেয়ের সংসার, বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প, সক্রেটিস, বৃত্তায়ন, শিউলি, আগুনপাখি, ফিরে যাই ফিরে আসি, উঁকি দিয়ে দিগন্ত প্রভৃতি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইয়ের মধ্যে রয়েছে একাত্তর: করতলে ছিন্নমাথা, লাল ঘোড়া আমি, ফুটবল থেকে সাবধান ইত্যাদি। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে গোবিন্দচন্দ্র দেব রচনাবলী, একুশে ফেব্রুয়ারি গল্প সংকলন, জন্ম যদি তব বঙ্গে ইত্যাদি। কথাসাহিত্যে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার, পদক ও সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭০), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), আলাওল সাহিত্যপুরস্কার (১৯৮৩), অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৪), ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), কাজী মাহবুব উল্লাহ ও বেগম জেবুন্নিসা পুরস্কার।এছাড়া ১৯৯৯ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন হাসান আজিজুল হক। ‘আগুনপাখি’

উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার।২০১২ সালে তিনি ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি পান।তাঁর জীবনের এ মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজশাহীর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিহাস কমিউনিটি সেন্টারে জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দীর্ঘ ৩১ বছর অধ্যাপনার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে বিশ্ববিদালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) নিজ বাড়ি ‘উজান’-এ লেখালেখি নিয়ে মগ্ন আছেন।

মুক্ত ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

মুক্ত ক্যাম্পাস/জান্নাত/এমআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধপর্দা উঠলো ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলার’
পরবর্তী নিবন্ধচবিতে নতুন ক্যাডেট নিচ্ছে বিএনসিসি নৌ শাখা