স্বপ্নবাজ তরুণ তাহমিদ, ইচ্ছা শক্তিতেই উদ্যোক্তা

কুবি প্রতিনিধি
বুধবার, ০৮ জুন ২০২২ | ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মূল ফটকের পাশে ছোট্ট এক খাবারের দোকান। যার নাম ‘ড্রিম আপ’। এখানে খেতে আসা অধিকাংশরাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের পদচারণায় সারাক্ষণই মুখর থাকে দোকানটি। এখানে দিনভর চলে আড্ডা আর হুল্লোর। চলে ক্লাস লেকচার নিয়ে আলোচনা। স্টাডি বা গ্রুপ স্টাডি করে কেউ কেউ এখানে খেয়ে একটু রিফ্রেশ হন। কখনো বা বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনার ঝড় ওঠে রাজনীতি নিয়ে। বন্ধুদের খুনসুটিও কম হয় না। তাই ক্যাম্পাসে এই দোকানটি বেশ জনপ্রিয়। সামান্য উপলক্ষ পেলেই শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন তাহমিদ ইমনের এই ছোট্ট খাবারের দোকানটিতে। স্বপ্নবাজ তরুণ উদ্যোক্তা তাহমিদ ইমন এখন অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার নাম।

মজার ব্যাপার হলো তাহমিদ ইমনও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি নৃবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করেন। ক্যাম্পাসের পাশে বার্গার দোকান দিয়ে বর্তমানে ক্যাম্পাসে বেশ জনপ্রিয় এই তরুণ। অনেকের চোখে হিরোও তিনি।

স্বপ্নবাজ এই তরুণ উদ্যোক্তা তাহমিদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ইচ্ছা ছিল নিজে কিছু একটা করার। সেই ইচ্ছাই আমাকে স্বপ্ন দেখাতো। এরপর দেখলাম, ক্যাম্পাসে বার্গারের দোকান নাই। কিন্তু বর্তমানে তরুণদের জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় বার্গার অন্যতম। সেই চিন্তা ভাবনা থেকে কাজ করা শুরু করি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে উদ্যোক্তার খাতায় নাম লেখাই। শুরুতে পরিস্থিতি একটু কঠিন ছিল। এখন ঠিকঠাক কাজ করতে পারছি। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছেও ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার বার্গার সকলেই খুব পছন্দ করছে। আমার ভালো লাগে।’

শুরুতে পরিবার থেকে ১ লাখ টাকার পুঁজি নিয়ে কাজ করা শুরু করেন তিনি। সেসময় পুঁজি কম থাকলেও ইচ্ছা শক্তি ছিল প্রবল। সেই ইচ্ছে দেখে পরিবারের সদস্যরাও তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসে বার্গার প্রেমিকদের কাছে এক নামে পরিচিত তাহমিদ— এভাবেই জানাচ্ছিলেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।

তাহমিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের চোখের সামনে দেখছেন কিভাবে খাবারটি তৈরি হচ্ছে। কৌতুহল নিয়ে চেয়ে থাকেন তারা। তাদের থেকে বার্গারের ভালো ফিডব্যাক পাচ্ছি। দিনদিন ক্যাম্পাসে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রচুর শিক্ষার্থী বার্গার খেতে আসেন বন্ধুদের নিয়ে। আবার অনেকে পরিবারের জন্য নিয়ে যায়। বিষয়টি খুব ভালো লাগে।’

তাহমিদের ‘ড্রিম আপ’—এ খেতে আসা এক শিক্ষার্থী মুক্ত ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ফুডকার্ট থেকে খাওয়াটাই অন্যরকম অনুভূতি। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে একজন উদ্যোক্তা হয়েছে উঠেছেন। একদিন সফলও হবে। এটা সত্যিই গর্বের। তার খাবারের মান ও স্বাদ ভালো। তার এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’

বর্তমানে তাহমিদের ফুডকার্ডে আরেক শিক্ষার্থী তাকে সহযোগিতা করছেন। কাজের সুযোগ পেয়ে তিনিও আনন্দিত।

তাহমিদের প্রসংশা করেছেন কুবি অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদার। তিনি মুক্ত ক্যাম্পাসকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পড়াশোনা করার জায়গা নয়। এখানে নিজের মেধাকে কাজে লাগতে হবে, নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হবে। তাহমিদ পড়াশোনার পাশাপাশি চমৎকার কাজ করেছেন। তিনি এক দিকে নিজে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, সে সঙ্গে দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব রাখছেন। তার সফলতা কামনা করি।

প্রিয় পাঠক, শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ক সর্বশেষ আপডেট পেতে মুক্ত ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে লাইক দিন। লিঙ্ক : https://www.facebook.com/Muktocampus

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুবিতে নবীনবরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠিত
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ তাঁত বোর্ড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২-পদ ১৯টি