সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এমসি রিপোর্ট
সোমবার, ২২ আগস্ট ২০২২ | ৩:২৩ অপরাহ্ণ
একাদশে বেসরকারি কলেজে ভর্তি ফি নির্ধারণ

আগামী বুধবার থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন থাকবে। অর্থাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে দু’দিন বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং সরকারি অধীনের অফিস চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।  সোমবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাপ্তাহিক বন্ধের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

তিনি আরও জানান, ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে দুই দিন বন্ধ থাকবে। বুধবার থেকে এ সময়সূচি কার্যকর হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন

সচিব জানান, জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিসগুলোতে দিনের বেলা বৈদ্যুতিক বাতি যথাসম্ভব বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পর্দার ব্যবহার কমানোর নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সময়সূচির ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সুবিধাজনক অবস্থায় নিজেরা নির্ধারণ করবে। যতদিন বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির বিষয়ে একটা সুবিধাজনক অবস্থায় না আসবে, ততদিন এই নির্দেশনা বহাল থাকবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি জানান, বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কেবিনেটের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এর মধ্যে আমন ধানের সেচ সুবিধা ও সার কারখানার জন্য আগামী ১২-১৫ দিন গ্রামে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সময়টা নির্দিষ্ট করবে কৃষি মন্ত্রণালয়।

তিনি জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিন এমন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন হতে পারে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় আইন, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ও হালকা প্রকৌশল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে বিলাসবহুল পণ্য আনা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

গত মাসের সাত তারিখ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সারা দেশে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জুলাই মাসের ১৯ তারিখ থেকে সারা দেশে এলাকা ভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। যদিও বেশিরভাগ এলাকাতেই লোডশেডিং তার চেয়ে বেশি হচ্ছে।

জুলাই মাস থেকেই জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিসের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে গুঞ্জন ছিল। ২১ জুলাই এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যদি দেখি বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করে পুরো সময় অফিস করতে পারছি, তাহলে অফিসের সময় কমানোর দরকার নেই।

মন্ত্রিপরষিধ সচিব আরও বলেন, আমরা পর্যালোচনার মধ্যে আছি কোনটা করলে ভালো হয়। এটি নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা করা হবে। তবে এখন আমাদের ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে চলছে।

সরকার সব কর্মকাণ্ডকে স্বাভাবিক গতিতে রেখেই সব কাজ চালিয়ে নিতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।

মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৬ মার্চের পর ৫৪৪ দিন বন্ধ ছিল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। করোনার প্রভাব কিছুটা কমে এলে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে ফেরার সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা।

এরপর মোটামুটি স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত এলো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবুধবার থেকে সরকারি অফিস ৮-৩টা
পরবর্তী নিবন্ধআরও ২ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন