বেনাপোলে উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমেছে অর্ধেকে

বেনাপোল প্রতিনিধি
বুধবার, ২৬ জুন ২০১৯ | ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ | 280 বার পঠিত

রাজস্ব বাড়াতে পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিয়ে বেনাপোল শুল্কভবনের নতুন নির্দেশনা জারির পর আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি অর্ধেকে নেমেছে।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ৭৫ দিনে বেনাপোল বন্দরে চ্যাসিজ আমদানি কমেছে ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ । ২০১৮ সালের একই সময় এই বন্দরে চ্যাসিজ আমদানি হয়েছিল ৫৭৮০টি অথচ ২০১৯ সালে আমদানি হয়েছে ২৫৩৯টি চ্যাসিজ। এখাতে গতবছরের তুলনায় এবার রাজস্ব আদায়ও সাড়ে ৫২ শতাংশ কম হয়েছে ।

বেনাপোল শুল্কভবনের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী মুক্ত ক্যাম্পাসকে বলেন, ভারতীয় কাস্টম ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে ২৬টি পণ্যের ‘ট্রাক টু ট্রাক’ খালাসের ব্যবস্থা করাতে আমদানি রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে তবে উচ্চ শুল্কহারের ১৬টি পণ্যের আমদানি ব্যাপক ভাবে কমেছে।

উল্লেখযোগ্য পণ্যের মধ্যে বৈদুতিক যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি খাতে ৩৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ, টু ও থ্রি হুইলার যন্ত্রাংশে ১৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, চা পাতায় ৪৭ দশমিক ১০ শতাংশ, লোহা ও স্টিলের নাট বোল্টে ৩৭ দশমিক ২২ শতাংশ, সেনিটারি সামগ্রীতে ২৮ দশমিক ০৪ শতাংশ, বৈদুতিক বোর্ড প্যানেল ইত্যাদিতে ৮৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, ইমিটেশন জুয়েলারি খাতে ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ আমদানি কমেছে। কম শুল্ক হার ও মূল্যের পণ্য আমদানি বেড়েছে গত চার মাসের মোট আমদানির ৭৫  শতাংশ। কম শুল্ক হার ও মূল্যের পণ্যের যার থেকে রাজস্ব এসেছে মাত্র ৩.৫ শতাংশ ।

চ্যাসিজ আমদানি কমে যাওয়ার কারন জানতে চাইলে বেলাল হোসাইন চৌধুরী  বলেন, বাংলাদেশে ও ভারতের জাতীয়  নির্বাচন ও ঈদের লম্বা ছুটির কারণে আমদানি কম হয়েছে। এছাড়াও বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা চ্যাসিজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

র্যাংগস গ্রুপের আমদানিকারকের প্রতিনিধি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দেশে চাহিদা কমে যাওয়ায় চ্যাসিস আমদানি কমেছে। আমদানিকারকরা বিভিন্ন কোম্পানির চ্যাসিজ আমদানি করে থাকেন তবে বাজারে বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেকে নতুন করে চ্যাসিজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। তবে বনগাঁর কালি তলা পার কিনের সিরিয়ালের জন্য চ্যাসিজ ঢুকতে দেরি হয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টম বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, আর কত চ্যাসিজ ঢুকবে। চেজিজ বিক্রি হতে হবে তো? বিক্রি করতে না পারায় আমদানিকারকদেরও অর্থ সংকটে পড়তে হচ্ছে। এটাই চ্যাসিজ আমদানি কম হওয়ার মূল কারণ বলে মনে করি।

শুল্কভবনের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আগে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০টি চ্যাসিজ আমদানি হয়েছে অথচ এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ থেকে ১৫টি। তবে নিম্ন শুল্কের পণ্যের আমদানি বেড়েছে । আগে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ২৭০ ট্রাক পণ্য বন্দরে ঢুকলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারশো’র উপরে।

প্রেট্রাপোল হয়ে বেনাপোলে শনিবারে ঢুকেছে ৫৬টি চ্যাসিজ, রবিবারে বিকাল পাঁচটা  পর্যন্ত ৩০টি চ্যাসিজ।

এদিকে আমদানি বাড়ায় ️দৈনিক রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন,  যেখানে শুল্কভবনের দিনে গড় রাজস্ব আদায় ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা সেখানে বৃহস্পতিবার (২০জুন) আদায় হয়েছে ৫৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা।

২০১৯ সালের ১ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা পড়ে ১৫১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা অথচ চলতি বছরের একই সময়ে জমা পড়েছে ১৫৩ কোটি ০১ লাখ টাকা। উচ্চশুল্ক হারের পণ্য আমদানি ঠিক থাকলে রাজস্ব আদায়েও একটা রেকর্ড সৃষ্টি হতো বলে মনে করেন তিনি।

মুক্ত ক্যাম্পাস/শেখ নাছির/রানা

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাককানইবিতে ফুটবলের কিং মেসির জন্মদিন পালিত
পরবর্তী নিবন্ধকুবিতে ৪২ কোটি ১৭ লাখ টাকার বাজেট পাশ