বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে গোটা পৃথিবী যখন টালমাটাল ঠিক সেই মুহুর্তে চিকিৎসা সেবার সাহায্য দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল কিউবা। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে সহায়তা করতে প্রতিনিয়ত নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত গড়ে চলেছে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিউবা। করোনাভাইরাসের লড়াইয়ে সহায়তার অংশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই শতাধিক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মী পাঠিয়েছে তারা। তবে কিউবার এই সহায়তা দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রহণ করায় সেটি ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
চ্যানেল নিউজ এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও কিউবার চিকিৎসক দলকে দেশে আসতে দেয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন। পম্পেও বলেন, আমরা ব্রাজিল, ইকুয়েডর, বলিভিয়া এবং অন্যান্য দেশের নেতাদের প্রশংসা করছি; যারা কিউবার শাসকদের এই সহায়তা নিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা এবং কাতারের মতো অন্যান্য সব দেশকেও একই ধরনের কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার অংশ হিসাবে সোমবার ২১৭ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছায়। কিউবার এই বিশেষজ্ঞ দলে রয়েছেন মহামারি বিশেষঞ্জ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, পারিবারিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রযুক্তি প্রকৌশলী।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনার জবাবে টুইট করেছে কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল। তিনি বলেছেন, কিউবার আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল সহযোগিতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নির্বিচারে মিথ্যাচার এবং অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলছে। বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, আফ্রিকা মহাদেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৩৫০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে দেশটিতে মারা গেছেন ১০৩ জন। তবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৭৩ জন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিউবা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারিতে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। করোনার লড়াইয়ে সহায়তা করতে গেল দুই সপ্তাহে বিশ্বের ১৯টি দেশে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছে কিউবা। এর ফলে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে দেশটি।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যাপক বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে; যা আগামী ১ মে থেকে ধারাবাহিকভাবে শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। কিউবার পারিবারিক চিকিৎসকরা দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রত্যেকটি বাড়িতে গিয়ে লোকজনকে স্ক্রিনিং এবং পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজারের বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে; এরমধ্যে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশে গটেংয়েই সাড়ে ১৩ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এ প্রদেশেই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
আমাদের সাথে ফেসবুক পেজে কানেক্ট থাকুন: মুক্তক্যাম্পাস
মুক্ত ক্যাম্পাস/রিফাত
