স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক (এসআইটি) পদ্ধতিতে বন্ধ্যা মশা দিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাভারস্থ পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এসআইটি পদ্ধতিতে পুরুষ জাতীয় এডিস মশাকে গামা রশ্মি প্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ্যা করা হবে। পরে ওই মশা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন এলাকায় অবমুক্ত করা হবে। এরপর অবমুক্ত করা পুরুষ মশা এডিস মশার সাথে মিলিত হয়ে এগুলোর লার্ভাগুলো নিষিক্ত হবে না। ফলে এডিস মশার পরিমাণ কমতে থাকবে। এভাবেই বন্ধ্যা মশা দিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”
এসময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী আরো বলেন, “ডেঙ্গু নিরসনে (এসআইটি) পদ্ধতির প্রায়োগিক বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন এই কার্যক্রমকে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।”
“ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনের জন্য এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর এবং আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি। পাশাপাশি এটি একটি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি, তাই পরিবেশের এর কোন বিরুপ প্রভাব নেই। এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র বন্ধ্যা পুরুষ মশাই প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে। যেহেতু পুরুষ মশা ডেঙ্গুর জীবাণু বহনে অক্ষম, তাই এর মাধ্যমে ডেঙ্গু বিস্তার ঘটার কোন সম্ভাবনা নাই। এছাড়াও পুরুষ এডিস মশা মানুষকে কামড়ায় না। কাজেই কমিশনের এসআইটি পদ্ধতিটি দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম”, যোগ করেন ইয়াফেস ওসমান।
এর আগে শনিবার সকালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাভারস্থ পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. স্বপন কুমার চক্রবর্তী এক প্রেস রিলিজে জানান, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের কীট জীব প্রযুক্তি বিভাগের বিজ্ঞানীরা ডেঙ্গু বিস্তারকারী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এসআইটি নামে একটি কার্যকরী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।
পরে সকালে উক্ত পদ্ধতির কারিগরি দিক পরিদর্শন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এসময় তিনি উদ্ভাবিত পদ্ধতি নিয়ে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন ও পদ্ধতিটি শিগগিরই মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. স্বপন কুমার চক্রবর্তী, কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক, সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন, এনআইবির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ, এইআরই এর বিভিন্ন ইন্সটিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, বিভিন্ন স্তরের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মুক্ত ক্যাম্পাস/জেডআর