২৬০০ শিক্ষকের এমপিও নিয়ে অচলাবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ | ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

এমপিও’র ঘোষণার পরও দীর্ঘ এক বছর কারিগরি, ভোকেশনাল ও কৃষির ৪৮৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৬০০ শিক্ষক এমপিও থেকে বঞ্চিত আছেন। শিক্ষকদের অভিযোগ, অধিদপ্তরের গড়িমসির কারণে এখনো বেতন-ভাতা না পেয়ে কষ্টে দিন পার করছেন তারা।

তবে কারিগরি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাই করতে সময় লেগে যাচ্ছে।

জানা যায়, সাড়ে ৯ বছর পর নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয় সরকার। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সারাদেশের ২ হাজার ৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি বেতনের আওতায় আসেন। তবে এক বছর পার হলেও এখনো বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত কারিগরির আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষক।

রাজধানীর একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক বলেন, সাধারণ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা অনেকদিন থেকেই এমপিও’র অর্থ তুলছেন। অথচ কারিগরি, ভোকেশনাল, কৃষি ও বিএম শাখার শিক্ষকদের ইনডেক্স নম্বর এখন পর্যন্ত দেয়নি কারিগরি অধিদপ্তর।

জানা যায়, এমপিওভুক্তির জন্য কাগজপত্র চলতি বছর মে মাসে অধিদপ্তরে জমা দেন এসব শিক্ষকরা। এরপর কারিগরি অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, বোর্ড থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট যাচাই বাছাই করে জমা দিতে হবে। অথচ সাত মাস পার হলেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, এ বছর জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে বেতনের আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো। অথচ জেনারেল ও মাদ্রাসা শিক্ষকরা এমপিও’র টাকা তুলছেন। কিন্তু আমাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি।

কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক নেতা বলেন, এর আগে সরকার ঘোষিত দাবি বাস্তবায়নে অধিদপ্তর ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সে সময় কারিগরি সচিব দাবি বাস্তবায়নে আশ্বস্ত করেছিলেন; যা এখনো পূরণ হয়নি।

তিনি বলেন, অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট যাচাই করতে। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বলছে এটা অধিদপ্তরের কাজ। আবার করোনার সময় অনেকদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আমরা জানিনা কেনো প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও আটকে আছে আমাদের এমপিও। এখন আমরা যাবো কোথায়?

এ বিষয়ে কারিগরি অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (এমপিও) বিমল দে বলেন, অনেক শিক্ষকের কাগজে ত্রুটি থাকায় সময় লাগছে। এছাড়া, দেখা গেছে অনেক শিক্ষকের চাকরির নিয়োগেও ঝামেলা আছে।

কতজন শিক্ষকের বেতন আটকে আছে জানতে চাইলে বিমল দে বলেন, গত সপ্তাহে ৭৪ জন শিক্ষকের এমপিও আমরা ছাড় করেছি। আমি এই অধিদপ্তরে নতুন। তবে, আমার জানা মতে, ২৬০০ শিক্ষকের এমপিও এখনো আটকে আছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ (এমপিও) উপসচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন, আমরা ৪৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও’র অনুমোদন চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল অনুমোদন করেছি। এরপর অধিদপ্তর শিক্ষক-কর্মচারীদের মান্থলি পেমেন্ট অর্ডারটি ইনডেক্স অনুযায়ী নিশ্চিত করবে। যদি কেউ মনে করেন; অধিদপ্তর সমস্যা করছে তবে সেটির অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে দিতে হবে। মন্ত্রণালয় অবস্থা বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএ বছর হচ্ছে না ৪০তম বিসিএসের ফল
পরবর্তী নিবন্ধসিনিয়রের মার খাওয়া সেই ছাত্রলীগ নেত্রী হাসপাতালে ভর্তি