হোয়াইট হাউসের কর্মীদের মাস্ক পরার নির্দেশ দিলেও পরবেন না ট্রাম্প!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০ | ৮:০০ অপরাহ্ণ | 146 বার পঠিত

হোয়াইট হাউসের সকল কর্মীকে মাস্ক পরার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের দুই সহযোগীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সোমবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছেন তিনি। এতে হোয়াইট হাউসের কর্মীদের ওয়েস্ট উইংয়ে প্রবেশের সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে অন্যদের নির্দেশ দিলেও নিজে মাস্ক পরবেন না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। আজ মঙ্গলবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।

হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিজের মাস্ক না পরা নিয়ে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমার মাস্ক পরার দরকার নেই। কারণ আমি সবার কাছ থেকে অনেক দূরে থাকি। তবে অন্যদের এখন থেকে অবশ্যই মাস্ক পরে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে হবে।

ট্রাম্প বলেন, তিনি চান সবাই এ নিয়ম পালন করুক। ট্রাম্প আরও বলেন, হোয়াইট হাউসে প্রতিদিন কয়েকশ লোক প্রবেশ করে। কে নিজের অজান্তে ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছে আমরা জানি না। তবে আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।

মূলত হোয়াইট হাউসের শীর্ষস্থানীয় তিন কর্মকর্তা কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে ট্রাম্প প্রশাসন। নির্দেশনায় বলা হয়, কর্মীদের নিজ নিজ ডেস্কে বসে কাজ করার সময় ছাড়া বাকি সব সময় মুখে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ডেস্কে কাজ করার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যখন তারা হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উয়িংয়ে প্রবেশ করবেন, তখন অবশ্যই মাস্ক পরে থাকতে হবে। ট্রাম্পের দাবি, করোনাভাইরাস এড়াতে হোয়াইট হাউস ভালো কাজ করছে।

অথচ রোজ গার্ডেনের প্রেস ব্রিফিংয়ের প্রেসিডেন্ট নিজেই মাস্ক ছাড়া আসেন। এ সময় তিনি বলেন, এখন মাস্ক পরা নীতিটি প্রয়োজন। তবে তার মাস্ক পরার দরকার নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমি সবার থেকে অনেক দূরে অবস্থান করি। হোয়াইট হাউসে সংক্রমণ নিরসন করতে আমার এই নির্দেশনা মানার প্রয়োজন নেই। এদিকে ট্রাম্পের এমন নির্দেশনায় ইতোমধ্যে নিন্দা শুরু হয়েছে। কারণ কিছুদিন আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে কারো মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে আক্রান্ত শনাক্তের পর এমন নির্দেশনায় আবারও বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। এর আগে ১০ মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় হোয়াইট হাউসের ভাইরাস টাস্কফোর্স কমিটির তিন কর্মকর্তা সঙ্গরোধে যান। সঙ্গরোধে যাওয়া কর্মকর্তারা হলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি এস ফাউসি, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের পরিচালক ডা: রবার্ট রেডফিল্ড এবং খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কমিশনার স্টিফেন হ্যান।

শুক্রবার ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের সেক্রেটারি কেইটি মিলারের করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তিনি ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টেফেন মিলারের স্ত্রী। এর আগে ট্রাম্পের একজন ব্যক্তিগত কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ট্রাম্পের ওই কর্মচারী ওয়েস্ট উইংয় প্রেসিডেন্টের খাবার দেয়ার কাজ করেন।

হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টিকে ‘মূলত এক ব্যক্তি’ আক্রান্ত হয়েছে এবং তার সংস্পর্শে যারা এসেছিল পরীক্ষায় তাদের ফল নেগেটিভ এসেছে মন্তব্য করে উপেক্ষা করেন ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যারা নিয়মিত ট্রাম্পের সংস্পর্শে আসেন, এখন তাদের প্রতিদিন করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে রোজ গার্ডেনের আরেকটি অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সসহ উপস্থিতদের কেউই মাস্ক পরা ছিলেন না। এর চারদিন পর পেন্স, যিনি সবসময় প্রেসিডেন্টের পাশে থাকেন, লক্ষণীয়ভাবে সোমবারের ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন না; কয়েকদিন আগে তার প্রেস সেক্রেটারির করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।

প্রেসিডেন্টের জামাতা জ্যারেড কুশনারসহ এদিন অন্যান্য যারা উপস্থিতি ছিলেন তারা সবাই নির্দেশনা অনুযায়ী মাস্ক পরে এসেছিলেন। এই নির্দেশনা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সুরক্ষা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন।

মুক্ত ক্যাম্পাস/এসআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধখুলে দেয়া হলো ইরানের সকল মসজিদ
পরবর্তী নিবন্ধতিন দিন পর্যন্ত পার্সেল না ধরার পরামর্শ গবেষকদের