হোমিওপ্যাথি ওষুধে প্রতিরোধ হবে মরণঘাতী করোনাভাইরাস!

মুক্ত ক্যাম্পাস ডেস্ক
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২০ | ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | 467 বার পঠিত
করোনাভাইরাস: মৃত ৪২৫, ভুল স্বীকার করে নিলো চীন

করোনাভাইরাসে আতঙ্ক গোটা বিশ্বে। এই মরণঘাতী ভাইরাস মোকাবেলায় কার্যত অসহায় চীন। চীনে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এ ভাইরাসটিতে একদিনে নতুন করে আরও দেড় হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে শনাক্তস্থল হুবেই প্রদেশেই এক হাজারের বেশি। ফলে এ ভাইরাসে চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৭১১ জনে।

করোনাভাইরাসে এখনও পর্যন্ত ওষুধ বা ভ্যাকসিন তৈরিতে অক্ষম চীনা চিকিৎসকরা। এদিকে, করোনা আতঙ্কের আঁচ ভারতেও পড়েছে। কড়া নজরদারি, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে রোগীদের বিচ্ছিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থা ছাড়া আরও কোনো পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা মোকাবেলায় উপযুক্ত ওষুধ তাদের হাতে রয়েছে। ভ্যাকসিন বা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ নয়, হোমিওপ্যাথিতেই করোনা প্রতিরোধ করা যাবে।

ভারতের আয়ুর্বেদিক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা যায়। করোনা আক্রান্তের উপসর্গ সারানোর জন্য ইউনানি ওষুধ অত্যন্ত কার্যকর বলে জানানো হয়েছে। এ জন্য একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়। কী করা উচিত, কী করা উচিত নয় তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এমন কী ওষুধ খেতে হবে, তা-ও বলা হয়েছে।
আয়ুর্বেদিক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, আরসেনিকাম অ্যালবাম ৩০ (Arsenicum album 30) এই ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম।

এদিকে, আয়ুর্বেদিক মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশিকায় তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে হোমিওপ্যাথি কতটা ‘বিজ্ঞানসম্মত’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। কেউ কেউ পরামর্শ দেন ইউনানি মেডিসিন পড়ুয়াদের আগে মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পড়া উচিত। করোনার মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর ভাইরাস মোকাবেলায় আদৌ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা প্রযোজ্য কিনা তা এখনও প্রমাণ হয়নি। গবেষণা না করেই সরকারের তরফে এমন নির্দেশিকায় বিভ্রান্তি তৈরি হতে বলে মনে করছেন অনেকেই। সূত্র: জিনিউজ।

এদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মনে করেন তারা এখন কার্যত ‘একটি দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করছেন’। করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় দেশের অবস্থা এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

মরণ ভাইরাসের আক্রমণে মৃতের সংখ্যা আগেই ১৭০ ছাড়িয়েছে। উহান শহর এখনও গৃহবন্দি। এই পরিস্থিতিতে আজ বেজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস অ্যাডহ্যানোম গ্যাব্রিয়েসাস।

চীনা সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, টেড্রোসকে আশ্বস্ত করে জিনপিং বলেছেন, এই ভাইরাস নিয়ে যা যা রিপোর্ট তারা পাচ্ছেন, তা সবই প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে কোনও তথ্য লুকনো হচ্ছে না।

জিনপিং বলেছেন, এই ভাইরাস আসলে দৈত্যাকার। চীনের মানুষ লড়াই করছেন। বিশ্বের থেকে এই দৈত্যকে লুকনোর ক্ষমতা নেই আমাদের। ২০০২ সালে সার্সের সংক্রমণের সময়ে চীন সরকার যে গোপনীয়তা নিয়েছিল, এবারের ছবিটা তার থেকে আলাদা বলে স্বীকার করছেন অনেকেই।

এরই মধ্যে নিজেদের দেশের নাগরিকদের বিমানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। আজ উহানের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ২০৬ জন জাপানিকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে সে দেশের সরকার।

চীনে বিমান চলাচল বন্ধ করেছে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইৎজারল্যান্ডের বিমান সংস্থা। মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকাও। তাদের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, রোগ মোকাবিলায় চীনকে তারা একাধিক বার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির কাজও তারা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আমেরিকা। আজ থেকে চীনের সব চেয়ে বেশি সংক্রমিত হুবেই প্রদেশে সবকটি আউটলেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটি মার্কিন ফাস্ট ফুড চেন।

পাকিস্তান জানিয়েছে, উহানে অধ্যায়নরত চার ছাত্রের দেহে ভাইরাসটির নমুনা মিলেছে। ওই চারজন চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন।

তবে এর মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে জার্মানি এবং জাপানের দু’টি ঘটনায়। এতো দিন পর্যন্ত চীন থেকে অন্য কোনও দেশে কেউ গেলে তার থেকে সেই ভাইরাস সে দেশে ছড়াচ্ছিল। এবার মানুষের সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগের ফলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কথা জানা গেছে। জাপানে ষাট বছরের এক বৃদ্ধের শরীরে ওই ভাইরাস পাওয়া গেছে। তিনি নিজে চীনে যাননি। কিন্তু উহান থেকে ফেরা কয়েকজন পর্যটক তার ট্যাক্সিতে চড়েছিলেন সম্প্রতি। সেখান থেকেই ছড়ায় সংক্রমণ। জার্মানিতেও এক ব্যক্তি আক্রান্ত। তার সহকর্মী সম্প্রতি চীন থেকে ফিরেছেন। তার সঙ্গে কয়েক দিন কাজ করার পরেই অসুস্থ হন ওই ব্যক্তি।

মুক্ত ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

মুক্ত ক্যাম্পাস/এমকে

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাবনায় পিয়নকে কুপিয়ে আহত
পরবর্তী নিবন্ধকরোনাভাইরাস : বিশ্ব কি জরুরি অবস্থা জারির দ্বারপ্রান্তে?