হলি আর্টিজান মামলার রায়কে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৯ | ৯:২৩ অপরাহ্ণ
হলি আর্টিজান মামলার রায়কে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার

ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল বুধবার। আলোচিত এ মামলার রায়কে ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।

আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি করছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ তথ্য প্রসিকিউশনের উপকমিশনার জাফর হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত চত্বর ঘুরে দেখেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ও মীর রেজাউল আলম।

তিনি আরও জানান, তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তাসংক্রান্ত নানা দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় উপকমিশনার জাফর হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। এ পর্যন্ত মোট ১১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে ৮ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়। একই বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের জিআর শাখায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন।

অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২১ আসামির মধ্যে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন বিভিন্ন অভিযানে এবং ৫ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

এ মামলার আসামিরা হলেন— হাদিসুর রহমান সাগর, তিনি অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা। আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী। মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, তিনি নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান। আবদুস সবুর খান ওরফে হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ, তিনি এ হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী। এছাড়া জঙ্গী রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।

হলি আর্টিজান হামলার মামলায় গ্রেপ্তার ৮ জঙ্গি হলো- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধী, রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান, মিজান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশীদ।

এছাড়া এ মামলায় আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে নিহত আটজন হলো- তামিম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে আর্টিজানে ভয়াবহ হামলা জালায় জঙ্গীরা। ওই হামলায় ইতালির ৯ নাগরিক, জাপানের ৭ নাগরিক, ভারতের ১ নাগরিক ও ২ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। সারা রাত জঙ্গি হামলার পর সকালে সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে এর সমাপ্তি হয়। পরে সেখানে ৫ জঙ্গি ও রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ সাইফুল ইসলামের লাশ উদ্ধার হয়। সাইফুলের সহকারী জাকির হোসেন শাওন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।

মুক্ত ক্যাম্পাস/এমআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধলক্ষ্মীপুরে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে পুত্রবধূসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধচবি চলচ্চিত্র সংসদের প্রথম কমিটি, নেতৃত্বে আনিস ও দৃষ্টি