২০ বছর পর জানা গেল গণবিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের সনদ ভুয়া!

নিজস্ব প্রতিবেদক
রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১১:৪১ অপরাহ্ণ | 116 বার পঠিত
ছাত্রীর কাছে স্বর্গীয় সুখ চাওয়া সেই গবি রেজিস্ট্রার স্থায়ী বহিষ্কার

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে ২০ বছর চাকরি করার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়ে রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেনের শিক্ষা সনদ ভুয়া। পরে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সব সদস্যের সম্মতিক্রমে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

শনিবার ঢাকার ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ভবনের মেজর এটিএম হায়দার বীরউত্তম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণবিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা শনিবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় সদস্যদের মধ্যে অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক হোসনে আরা শাহেদ, অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জুমের মাধ্যমে জরুরি সভায় যোগ দেন ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদ্দাচ্ছের আলী, ওয়ালিউল ইসলাম এবং শিরীন পারভীন হক।

২০ বছর পর জানা গেল গণবিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের সনদ ভুয়া!

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভুয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট দিয়ে ২০০২ সালের ৩ আগস্ট গণবিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড তার আচার-আচরণ দেখে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় ট্রাস্টি বোর্ড গোপনে রেজিস্ট্রার মো. দেলোয়ার হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে তদন্ত করতে থাকে। খোঁজখবরের এক পর্যায়ে জানতে পারেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেন ইন্টার পাস। তিনি গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী ও মাস্টার্স পাসের সনদ দিয়ে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি নিয়েছেন।

এদিকে, ছাত্রীর কাছে যৌন প্রস্তাবের অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অডিও ক্লিপটি মুক্ত ক্যাম্পাসের কাছে সংরক্ষিত আছে।

প্রাপ্ত রেকর্ডিংয়ে রেজিস্ট্রার ঐ ছাত্রীকে বলেন, ‘আমি কত আগ্রহ নিয়ে আসছি। একাডেমিক ভবনে মিটিং রেখে তাড়াতাড়ি চলে আসছি। তোমার বোঝা উচিত ছিল লোকটা তাড়াহুড়ো করে আসছে। একটু আদর দিয়ে দেই। নদীর পাড়ে বসবো, শেখাবো। এরপর রুমে রেস্ট নিবো। কিছু ঘটবে। দুটো মানুষ একসঙ্গে রেস্ট নিলে তো কিছু ঘটবার সম্ভাবনা থাকে, নাহ্!’

রেকর্ডিংয়ে রেজিস্ট্রার যৌন সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে ঐ ছাত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘একটা যুবক-যুবতী যদি একসাথে থাকে, তখন কী হয় তুমি বুঝো না? ভালোবাসা গভীর হয়। একটা আত্মা আরেকটা আত্মার সাথে মিশে যায়। সে সুখ স্বর্গীয় সুখ, যেটা কিনতে বা খেতে পাওয়া যায় না।’

ঐ ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘কবে যাবা? আগামী অক্টোবর ৬/৭ তারিখের দিকে। আমরা সকালে যাবো বিকেলে ফিরে আসবো। আমার গাড়ি আছে সমস্যা হবে না।’

এছাড়া রেজিস্ট্রার যৌন সম্পর্কের বিষয়ে ঐ ছাত্রীকে এমন কিছু কথাবার্তা বলেন, যা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্রাটের বিরুদ্ধে ১৯৫ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলা
পরবর্তী নিবন্ধএইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের পক্ষে শিক্ষাবিদরা, প্রস্তুত কেন্দ্র