লক্ষ্মীপুরে মাদরাসার ৬ শিক্ষার্থীর চুল কাটলেন শিক্ষক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
শুক্রবার, ০৮ অক্টোবর ২০২১ | ৬:০৭ অপরাহ্ণ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কাঁচি দিয়ে কেটে লাঞ্ছিত করার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই লক্ষ্মীপুরে ছয়জন ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন এক মাদরাসা শিক্ষক।

জেলার রায়পুর উপজেলার হামছাদী কাজির দিঘীর পাড় আলিম মাদরাসার দশম শ্রেণির ৬ ছাত্রের চুল কেটে দিয়ে জেলাব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার শিকার ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির।

এঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ আজ শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে কমেন্টে ব্যাপক নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বুধবার ক্লাস চলাকালীন সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে তারা ক্লাস না করেই মাদরাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এতে ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মাদরাসার দাখিল শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও ফজলে রাব্বীসহ কয়েকজন জানায়, গত বুধবার তাদের ইংরেজি ক্লাস চলছিল। এ সময় হঠাৎ করে সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির স্যার কাঁচি (কেঁচি) দিয়ে আমাদের ৬ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেয়। এ ঘটনার পর ছাত্ররা ক্লাস না করে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে মাদরাসাটির অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ছাত্ররা তাদের ক্লাস শেষ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্র জানায়, ইংরেজি ক্লাসের প্রথম ঘণ্টা পড়ার পর হঠাৎ করে মঞ্জুরুল স্যার আমাদের (ক) শাখার ক্লাসে ঢুকে ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেয়। কিন্তু খ শাখার কোন ছাত্রের চুল উনি কাটেননি।

সে বলে, আমি মাথা বেল করে ৪ দিন মাদরাসায় যাইনি। পরে স্যার দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। এর পরে আমি মাদরাসায় যাই।

অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি দাখিল শ্রেণির সকল ছাত্রকে পরীক্ষার আগের দিন চুল কেটে মাদরাসায় আসতে বলেছি। ছাত্ররা আমার কথার অবাধ্য হওয়ার কারণে কয়েক ছাত্রের চুল কেটে দিয়েছি। আমি ওদেরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকা ও নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার জন্যই চুল কেটে দিয়েছি। তবে আমি কাউকে কোন হুমকি দেয়নি।

বামনী ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন মুন্সী বলেন, মাদরাসার শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামের আমির হওয়ায় প্রায় সময় ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তার ভয়ে ছাত্রতো দূরের কথা অন্য শিক্ষকরাও নিরুপায় বলে আমি জানি। সে ওই মাদসারায় জামায়াতের জঙ্গি শাসন করতে চায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরীন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২৪ ঘণ্টায় দশের নিচে নামল করোনায় মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধচোখে মরিচের গুঁড়ো ছিটিয়ে কুবি শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টা