সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা রায়হান আহমদের মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন।
আজ বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন এ হত্যা মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান।
তিনি জানান, মামলার পর প্রাথমিকভাবে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া কোতোয়ালী থানার উপপরিদর্শক আব্দুল বাতেন পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন।
সেই আবেদন প্রেক্ষিতেই আজ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনুমতি প্রদান করে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ বিষয়ে দায়িত্ব প্রদান করেছেন বলে জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার রায়হান হত্যা মামলার তদন্তভার কোতোয়ালী থানা থেকে পিবিআইয়ে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। রাতেই মামলার সকল নথি পিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়।
আজ সকাল থেকে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করার পর দুপুর ১২টার সময় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িকে ক্রাইমসিন হিসেবে ঘেরাও করে অনুসন্ধান চালায় পিবিআই।
এর আগে গত রবিবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নগরীর নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান উদ্দিন। ৬টা ৪০ মিনিটের সময় গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী।
মারা যাওয়ার পর রায়হানের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার হাতের নখও উপড়ানো ছিল। এ ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে হেফাজতে নির্যাতন করে রায়হানকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। রায়হানের মৃত্যুর জন্য দায়িত্বহীনতার দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার বাদ এশা নগরীর আখালিয়া জামে মসজিদে জানাজা হয় রায়হান উদ্দিনের। পরে আখালিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে রায়হান উদ্দিনের লাশের পুনঃময়নাতদন্তের আবেদন জানানো হয়। বুধবার আদালত পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি দেন।