মিরপুরের রূপনগর থানার পেছনের ঝিলপাড় বস্তিতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত সাড়ে ১০টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখানে হাজারেরও বেশি ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে বলে দাবি করেছেন বস্তিবাসীরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স) বলেন, রাত সাড়ে দশটার দিকে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৪টি ইউনিট কাজ করছে। এখন পর্যন্ত তিন জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে নিহত বা নিখোঁজ থাকার কোনও সংবাদ আমরা পাইনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদার বলেন, আগুন নেভাতে এখানে সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার পক্ষ থেকে পানি দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলে অনেকেই সহযোগিতা করেছে। তবে উৎসুক জনতা চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকায় আগুন নেভানোর কাজে ব্যাঘাতও ঘটিয়েছে। আমরা কাজের ব্যাঘাত ঘটুক তা চাই না। এখনও কেউ মারা যাওয়ার খবর আমরা পাইনি।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তদন্ত না করে বলতে পারবো না। আমরা আগে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে এটি বলা যাবে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দীলিপ কুমার সাহা জানান, ঝিলের ওপরে ঘরবাড়িগুলো করা ছিল। কাঠ, বাঁশ এবং চাটাই ও টিন দিয়ে ঘরবাড়িগুলো তৈরি করা। আগুন লাগার পরপরই তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঝিলে পানি থাকায় আমাদের সেখানে ঢুকতে বেগ পেতে হয়েছে। আশেপাশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকেও পানি পেয়েছি। এখন পর্যন্ত কারও নিখোঁজ থাকার কথা জানায়নি কোনও পরিবার। বস্তির গলি সরু থাকায় গাড়ি ভেতরে ঢোকানো যায়নি। মেইন সড়কে গাড়ি রেখে পাইপ টেনে পানি নেওয়া হয়েছে, এজন্য বেগ পেতে হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মিরপুরের রূপনগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সুচিকিৎসা, আহার ও বাসস্থানসহ সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এ মুহূর্তে প্রথম কাজ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতদৃষ্টিতে কেউ আগুন লাগিয়ে নাশকতা করেছে, এমনটা মনে হচ্ছে না।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই এ বস্তিবাসীর জন্য বাউনিয়া বাঁধে ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছেন। তাদের সেখানে যাওয়ার কথা।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসা প্রদান করা অন্যতম কাজ। তাছাড়া যাদের ঘর-বাড়ি পুড়ে গেছে, তারা জানেন না এখন বা আগামীকাল তারা কি খাবেন, কোথায় থাকবেন। ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর জন্য চিকিৎসা, আহার, বাসস্থান সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে সিটি কর্পোরেশন।
এদিকে, বস্তিবাসীরা অভিযোগ করেছেন, আগুনে তাদের হাজারেরও বেশি ঘর পুড়ে গেছে। আগুনে পুড়ে তারা সমস্ত সহায় সম্বল হারিয়েছেন।
মুক্ত ক্যাম্পাস/জেডআর