মাবিয়া-শীলাদের সাড়ে ২০ লাখ টাকা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

মুক্ত ক্যাম্পাস প্রতিবেদক
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২০ | ৬:৪৭ অপরাহ্ণ | 119 বার পঠিত
মাবিয়া-শীলাদের লাখ টাকা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

২০১৬ শিলং-গৌহাটি এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী তিন ক্রীড়াবিদের আবাসনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গেল বছর অক্টোবরেই সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শীলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও শুটার শাকিল আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ফ্ল্যাটের কাগজপত্র বুঝে পেয়েছেন।

এবার ফ্ল্যাট বুঝে পাওয়ার আগ পর্যন্ত মাবিয়া-শীলা সহ এই তিন ক্রীড়াবিদ যে ভাড়া বাসায় থাকতেন, সেই টাকাও প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী

সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে তিন ক্রীড়াবিদের হাতে মোট ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

শুটার শাকিলকে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ভারোত্তোলক মাবিয়া ও সাঁতারু শীলাকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা করে প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব আকতার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বাসা ভাড়া বাবদ টাকা বুঝে পেয়ে দেশ সেরা তিন ক্রীড়াবিদ প্রধানমন্ত্রী ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

বছরের শেষটা রাঙিয়েছে এসএ গেমস, যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন তীরন্দাজরা। এ বছরে আন্তর্জাতিক অর্জনের দিক থেকে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন নারী ক্রীড়াবিদরা।

রোমান আলোয় উদ্ভাসিত বছর

রোমান সানার ২০১৯ সালের সাফল্যর পথে যাত্রা শুরু ইসলামিক সলিডারিটি আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে। আন্তর্জাতিক র্যাংকিং প্রতিযোগিতায় রিকার্ভ একক ইভেন্টে রুপা জয় করেন ২৪ বছর বয়সী খুলনার এ তীরন্দাজ। পরবর্তী সময়ে নেদারল্যান্ডসে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতেন। এ আসর দিয়েই টোকিও অলিম্পিকের টিকিট পান। বাংলাদেশের প্রথম আরচার হিসেবে কোটা প্লেস পেয়েছেন রোমান। এর মধ্য দিয়ে গলফার সিদ্দিকুর রহমানের পর মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে এমন কৃতিত্ব দেখালেন এ আরচার। পরবর্তী সময়ে ফিলিপাইনে এশিয়া কাপ আরচারিতে একক ইভেন্টে স্বর্ণ, দলীয় ইভেন্টে রুপা ও মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে ব্রোঞ্জপদক পান রোমান।

পদকের হিসাবে সবচেয়ে বড় সাফল্য বছরের শেষ দিকে এসএ গেমসে পান এ তীরন্দাজ। নেপালে অনুষ্ঠিত আসরে তার পাশাপাশি উজ্জ্বল ছিলেন সতীর্থরাও। আরচারির ১০ ইভেন্টে শতভাগ সাফল্য পায় বাংলাদেশ। একক, দলীয় ও মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে স্বর্ণ জয় করে ত্রিমুকুট মাথায় তোলেন রোমান। ত্রিমুকুট পান রিকার্ভ ডিভিশনের ইতি খাতুন ও কম্পাউন্ড ডিভিশনের সোহেল রানাও।

এসএ গেমস ইতিহাসের সেরা সাফল্য

আরচারিতে উজ্জ্বল আসরে এসএ গেমসের ইতিহাসে সেরা সাফল্যর তৃপ্তি নিয়ে নেপাল থেকে ফিরেছে বাংলাদেশ। গেমসে লাল-সবুজদের প্রাপ্তি ছিল ১৯ স্বর্ণ, ৩৩ রুপা, ৯০ ব্রোঞ্জসহ ১৪২ পদক। গেমসে এতদিন সেরা সাফল্য ছিল ২০১০ সালে ঢাকায় আয়োজিত আসরে। যেখানে প্রাপ্তি ছিল ১৮ স্বর্ণ, ২৩ রুপা, ৫৬ ব্রোঞ্জসহ ৯৭ পদক।

মাবিয়ার দ্বিতীয় স্বর্ণ  অন্যান্য

গেমসে সেরা সাফল্যর কীর্তি গড়ায় আরচারির পর বেশি অবদান ছিল কারাতের। এ ডিসিপ্লিন থেকে তিনটি স্বর্ণপদক আসে—আল আমীন, মারজান আক্তার প্রিয়া ও হুমায়রা অন্তরা শিফার হাত ধরে। তার বাইরে দুটি করে স্বর্ণপদক আসে ভারোত্তোলন ও ক্রিকেট থেকে। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্তকে নিয়ে আগে থেকেই প্রত্যাশা ছিল। ২০১৬ সালের পর এবারো স্বর্ণ জিতেছেন এ ভারোত্তোলক। জিয়ারুল ইসলামের স্বর্ণপদক আসে অনেকটা প্রত্যাশার বাইরে। নারী ও ছেলেদের ক্রিকেট নিয়েও গেমসের আগে থেকেই প্রত্যাশা ছিল। দুই বিভাগেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে লাল-সবুজরা। তার বাইরে ফেন্সিংয়ে ফাতেমা মুজিবের স্বর্ণপদক জয় করা ছিল বড় চমক।

গেমসের বাইরেও কারাতে আলো

এসএ গেমস ছাড়াও চলতি বছরে সাফল্যর আলো ছড়িয়েছেন দুই কারাতেকা—হুমায়রা অন্তরা শিফা ও মারজান আক্তার প্রিয়া। প্রথমজন মম্বোডিয়ায় কামুতসুমা ওকোকাই ইন্টারন্যাশনাল কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি স্বর্ণ ছাড়াও একটি রুপা জয় করেন। এছাড়া ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ওপেন কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে স্বর্ণপদক জয় করেন হুমায়রা অন্তরা শিফা। মারজান আক্তার প্রিয়া মম্বোডিয়ায় কামুতসুমা ওকোকাই ইন্টারন্যাশনাল কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ, রুপা ও ব্রোঞ্জপদক পান।

ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে নারীরা

২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক সাফল্যর দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে বাংলাদেশের নারীরা। ১৯ স্বর্ণপদকের মধ্যে ১১টি জয়ে নারীদের ভূমিকা ছিল। যার ছয়টিতে ছিল মেয়েদের একক কৃতিত্ব। মেয়েরা দলগতভাবে জিতেছে পাঁচ স্বর্ণপদক। এছাড়া মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে দুটি স্বর্ণজয়ে ছেলেদের পাশাপাশি অবদান রাখেন নারীরা। ছেলেরা একক ইভেন্টে পাঁচ ও দলগত ইভেন্টে জিতেছেন তিন স্বর্ণপদক।

মুক্ত ক্যাম্পাস/এমআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্রাক্ষণবাড়িয়ায় সরকারি খাল দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ মার্কেট
পরবর্তী নিবন্ধগেইলকে নিয়ে ‘মাইকিং’ তবুও নেই চোখে পড়ার মতো দর্শক