মদ হাতে সাংবাদিক উৎপলের ছবি ভাইরাল, আছে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ | 2713 বার পঠিত

মদের গ্লাস হাতে দৈনিক ভোরের পাতার তথাকথিত সাংবাদিক উৎপল দাসের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে উৎপল দাসের এক হাতে মদের গ্লাস অন্য হাতে সিগারেট সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

জানা যায়, উৎপল দাস নিয়মিত মদ্যপান করেন। রাজধানীর বেস্ট ওয়েস্টার্ন লা ভিঞ্চি হোটেলের বারে মদের নেশায় প্রায়ই বুদ হয়ে থাকেন তিনি। এই কথিত সাংবাদিক বিভিন্ন অবৈধ কাজে আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত। তার চাহিদার পরিমাণ টাকা না দিলে যে কারো বিরুদ্ধে অসত্য নিউজ এবং ফেসবুক স্ট্যাটাসের ভয় দেখান। মান-সম্মান বাচাঁতে ভুক্তভোগীরা তার ফাঁদে পা দেয়।

নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় জন্ম উৎপলের। পিতা পেশায় একজন শিক্ষক। দুই বোনের এক ভাই উৎপল। তবে পরিবারের সাথে বর্তমানে তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি পরিবারের। এলাকার এক ব্যক্তিকে চাকুরী দেয়ার নাম করে টাকা আদায় করে তার সাথে প্রতারণা করায় পরিবারের সাথে সম্পর্কে ফাঁটল ধরে উৎপলের।

উৎপলের ফেসবুক আইডি থেকে জানা যায়, সে নটরডেম কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তবে শোনা যায়, ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব টেকাতে পারেন নি তিনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, উৎপল ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও পদ প্রত্যাশীরা তার চাঁদাবাজির মূল লক্ষ্য। উৎপল তাদের ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে নিউজ করার হুমকি ধামকি প্রদান করেন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এই পরিচয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পদ পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিকাশে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার প্রমাণ রয়েছে। পদ পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দেয়ার ও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । উৎপলের অভিনব চাঁদাবাজির কল রেকর্ডসহ অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে।

অসংখ্য ভুক্তভোগীদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রতিবেদককে তথ্য-প্রমাণসহ জানান, খুলনা বিভাগের একটি জেলার ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ পাইয়ে দিতে চাঁদা দাবি করেন উৎপল। পরে টাকা চাঁদা দিলেও পদ মিলেনি। সে সংক্রান্ত এক চ্যাটলিস্টে দেখা যায় উৎপল তাকে মোবাইল মেসেজে বলেন, “পাঁচটার মধ্যে কিছু করলে আমিও আপনার জন্য কিছু করতে পারবো।” এর কিছুক্ষণ পরে ফের এক মেসেজে উৎপল বলেন, “থ্যাঙ্কস ব্রো. (ব্রাদার) গট ৫০০০।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইডেন সরকারী কলেজের এক ছাত্রী মুক্ত ক্যাম্পাসকে বলেন, সে আমার কাছে হাদিয়া চায়। আমাদের সামনে কমিটি হবে। কমিটিতে পদ পাইয়ে দেয়ার জন্য হাদিয়া চায় উনি। ইডেনের নাকি এভাবে অনেকের কাছেই হাদিয়া চেয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার জানা মতে তিন চার জন আছে যাদের থেকে উনি হাদিয়া চেয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উৎপল দাস বলেন, যা খুশি লিখে দেন। আপনিও সাংবাদিকতা করেন, আমিও সাংবাদিকতা করি। আমি বাংলাদেশ সরকার কে ট্যাক্স পে করে মদ খাই। আমি কাজ করার জন্য সবার কাছ থেকে টাকা নেই। আপনি কি বিনা পয়সায় কাজ করবেন?

মুক্ত ক্যাম্পাস/মিরহাজ/এমআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনা ভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
পরবর্তী নিবন্ধদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী