ভোলায় ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলেপল্লীতে নেই ঈদ আনন্দ

মো. আরিয়ান আরিফ: :ভোলা:
রবিবার, ১১ আগস্ট ২০১৯ | ৯:৫৪ অপরাহ্ণ | 233 বার পঠিত

ভরা মৌসুমেও মেঘনায় ইলিশ ধরা না পড়ায় ভোলার জেলেদের ঘরে নেই ঈদের আনন্দ। মৌসুম শুরু হলেও ইলিশের দেখা মিলছে না ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে। এতে অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন জেলেরা। ইলিশ মাছ না পাওয়ায় তাদের পরিবারে এবার ঈদের কোনো আনন্দ নেই। লোকসান গুণছেন আড়ৎদার ও পাইকাররা।

অপরদিকে অনেক জেলেই মানুষের দেনা ও সমিতির কিস্তির দায় নিয়ে চরম সংকটের মধ্যে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, হতাশ হওয়ার কিছু নেই, বৃষ্টি কম থাকায় নদীতে মাছ কম পড়ছে। বৃষ্টি শুরু হলে ইলিশের দেখা মিলবে বলে তারা আশা করছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দিনভর জাল ফেলেও জেলেদের জালে ইলিশের দেখা নেই। তাই ভোলার উপকূলের ১২৭টি ঘাটে নোঙ্গর দিয়ে জেলেদের নৌকা ও ট্রলার অপেক্ষা করছে। আড়তে অলস সময় পার করছেন আড়ৎদাররা। দু’এক ঝুড়ি মাছ ঘাটে আনা হলেও আগের মতো নেই হাকডাক। জেলের সাথে সাথে ব্যবসায়ীরাও হতাশ।

সরকারি হিসাবে জেলায় ইলিশ ধরার উপর নির্ভরশীল এমন জেলে রয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার। তবে নিবন্ধনের বাইরে আরো জেলে রয়েছে দুই লাখের অধিক। প্রতিবছর ইলিশ ধরার সময়ে তারা জাল, নৌকা ও ট্রলারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে নামেন। তারই ধারাবাহিকতায় এ মৌসুমেও নতুন উদ্যমে জাল-নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে গিয়ে তারা এখন হতাশ হয়ে ফিরছেন।

ভোলা সদরের তুলাতুলি ও ইলিশা মাছ ঘাটের জেলে নোমান মাঝি, সবুর মাঝি, ইসমাইল মাঝিসহ প্রায় ১৫-২০ জন জেলে জানান, টানা দুই মাস ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরা নিষেধ ছিল। ৩০ এপ্রিল ওই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে তাদের জালে ধরা পড়ছে না রূপালী ইলিশ। সারাদিন জাল ফেলে যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে, তা দিয়ে খরচ উঠছে না।

জেলেদের আশা ছিল এবারের আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হবে। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে তাদের জালে। পুরো আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে প্রচুর ইলিশ পাবে আর তা বিক্রি করে ঈদে সকলের জন্য নতুন নতুন জামা কাপড়, শাড়ি-লুঙ্গি কিনবে। সকলের মুখে হাসি ফুটাতে পারবে। কিন্তু নদীতে মাছ না থাকায় চিত্রটি সম্পূর্ণ উল্টো। তাই জেলে পরিবারে এবার ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।

তুলাতুলি ঘাটের আড়ৎদার ইউনুছসহ চার-পাঁচজন মাছ ব্যবসায়ী জানান, নদীতে মাছ না থাকায় তারা বসে বসে অলস সময় পার করছেন। ঘাটে নেই জেলেদের হাকডাক। সারাদিন অপেক্ষা করেও এক ঝুড়ি মাছ মেলানো যায় না। তাই এবারের ঈদে তাদের কোনো আমেজ নেই। নেই নতুন জানা-কাপড় কেনার আনন্দ।

সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, মৌসুম শুরু হলেও বৃষ্টি না থাকায় নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না। ভারি বর্ষণ শুরু হলে নদীতে প্রচুর ইলিশ পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

মুক্ত ক্যাম্পাস/আরিয়ান/জেডআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধলক্ষ্মীপুরে বাসের ধাক্কায় আহত ৬
পরবর্তী নিবন্ধধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পর্তুগালে ঈদুল আজহা উদযাপন