ভিন্ন আবহে বাজেট অধিবেশন বসছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
বুধবার, ১০ জুন ২০২০ | ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আজ বুধবার  বিকালে বসছে একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশন। এটি মূলত বাজেট অধিবেশন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকাল ৫টায় বৈঠক শুরু হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈশ্বিক মহামারীর মাঝে ভিন্ন আবহে অনুষ্ঠেয় বাজেট অধিবেশনটি অনেক দিক থেকেই ব্যতিক্রম। সাধারণত বাজেট অধিবেশন কেন্দ্র করে সংসদে এক ধরনের উৎসব বিরাজ করে। তবে এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিও থাকবে পূর্বনির্ধারিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের ইতিহাসে সংক্ষিপ্ত বাজেট আলোচনায় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রথমবারের মতো বাজেট অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি, দর্শনার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
 
অধিবেশন বিষয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অধিবেশনে বয়স্ক সংসদ সদস্যদের অংশ না নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে যাতে বসতে পারেন, সে জন্য ৮০-৯০ সংসদ সদস্য নিয়ে প্রতিদিন সংসদ চালানো হবে। সরকারি দলের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে আমরা অধিবেশনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। সেই অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। বয়স্ক ও অসুস্থদের আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
 
অধিবেশন চলাকালে সংসদ ভবন ও অধিবেশন কক্ষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংসদ অধিবেশনে দায়িত্ব পালন করবেন সংসদ সচিবালয়ের এমন ৪৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় ৪৩ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাদের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
 
প্রতিবার অধিবেশনের আগে মেয়াদ ও কার্যক্রম ঠিক করতে কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়। তবে গত সপ্তম অধিবেশনের মতো এবারও তা হবে না। সংসদের আইন শাখার প্রকাশিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অধিবেশন শুরু ও বাজেট পেশের দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদের বৈঠক বসবে। চলবে দেড়টা পর্যন্ত।
 
জানা গেছে, অধিবেশন শুরুর দিন অধ্যাদেশ উত্থাপন ও শোক প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শেষ করা হবে। ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা ও তা গ্রহণের পর সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হয়। অধিবেশনে সম্পূরক বাজেটের ওপর দুই থেকে চার দিন এবং সাধারণ বাজেটের ওপর ১২-১৫ দিন আলোচনা হয়। বাজেট নিয়ে ৫০ থেকে শুরু করে ৬৫ ঘণ্টার মতো আলোচনার রেকর্ড রয়েছে। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় অধিবেশ ও আলোচনা হবে সংক্ষিপ্ত। ১১ জুন বিকাল ৩টায় অধিবেশন শুরু হবে। বাজেট পেশ ও অর্থ বিল উত্থাপনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ দিনের কার্যক্রম।
 
বৃহস্পতিবার বাজেট উপস্থাপনের আগে সংসদে বসবে মন্ত্রিসভার বৈঠক। এই বৈঠকেও পূর্বনির্ধারিত মাত্র ১০ মন্ত্রী ও ১০ সচিব অংশগ্রহণ করবেন। বাজেট অনুমোদনের পর তা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ওই সময় সংসদ ভবনেই অবস্থান করবেন। পরে রাষ্ট্রপতি গ্যালারিতে বসে অধিবেশন দেখবেন।
 
১১ জুন বাজেট উপস্থাপনের পর ১২ ও ১৩ জুন বৈঠক মুলতবি রাখা হবে। ১৪ ও ১৫ জুন সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা ও সম্পূরক বাজেট পাস করা হবে। ১৬ জুন শুরু হবে প্রস্তাবিত সাধারণ বাজেটের ওপর আলোচনা। ১৬ ও ১৭ জুন দুদিন আলোচনা শেষে ১৮ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি থাকতে পারে। এর পর ২২ জুন থেকে ২৪ জুন আরও তিন দিন বাজেটের ওপর আলোচনা করে ২৫ জুন থেকে ২৮ জুন চার দিনের বিরতি দেওয়া হতে পারে। ২৯ জুন বাজেটের ওপর সমাপনী আলোচনা হবে। ওই দিনই পাস হবে অর্থবিল। পর দিন ৩০ জুন মূল বাজেট ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস হবে। এর পর আরেকটি বিরতি দিয়ে ৮ বা ৯ জুলাই একদিনের জন্য অধিবেশন বসে ওই দিনই সমাপ্তি টানা হতে পারে।
 
জানা গেছে, ১১ জুন বাজেট পেশের পর ২০২০-২১ অর্থবছরের সাধারণ বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে ছয় দিন। আর চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে দুদিন। সব মিলিয়ে বাজেটের ওপর ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা আলোচনা হবে।
 
 মুক্ত ক্যাম্পাস/রিফাত
পূর্ববর্তী নিবন্ধসৌদিতে সীমিত মুসল্লি নিয়ে হজের পরিকল্পনা
পরবর্তী নিবন্ধআইনজীবীর ওপর হামলা, মামলা নেয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের