ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সংক্রমণ মোকাবেলায় দেওয়া লকডাউন শিথিলের পর থেকে দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। বুধবার থেকে বৃহস্পতিকার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে তিন হাজার ৫৬১ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আরও ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৯৫২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটিতে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে এক হাজার ৭৮৩ জনে। এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার ২৬৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের মুম্বাই, দিল্লি, আহমেদাবাদের মতো ঘনবসতির শহরগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
কয়েক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দেশটিতে আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যায় স্থিতাবস্থা দেখা গেলেও অর্থনীতি সচল করতে লকডাউন শিথিলের পর মের শুরু থেকেই ওই চিত্র পাল্টে যায়। সর্বশেষ তিনদিনেই দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি মানুষের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও ভারতে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার করে নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হত, এখন এ সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবসতির দেশ হয়েও করোনাভাইরাসের মহামারিতে অন্য দেশগুলোর তুলনায় ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও কম। ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীন ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের চেয়েও আক্রান্তের সংখ্যা কম। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, সেজন্য দেশটিতে আগেভাগে লকডাউন ঘোষণাকে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ মোকাবেলায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্চেই দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করেছিলেন।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেছেন, অন্যতম জনবহুল শহর মুম্বাই শহরের রাজ্য মহারাষ্ট্র ঘিরে তাদের উদ্বেগ রয়েছে। ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে সহায়তায় প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য সব উপায়ে সরকার সহায়তায় প্রস্তুত- তা জনবল বৃদ্ধি হোক, সক্ষমতা বাড়ানোয়, কিংবা প্রযুক্তিগত সহায়তা হলেও দিতে প্রস্তুত’।
গত ২৪ মার্চ থেকে লকডাউন শুরুর পর গত সপ্তাহে কিছু কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আবারও অনুমতি দিয়েছে ভারত। কম আক্রান্ত এলাকায় লকডাউন শিথিল করে লাখ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক সংকট লাঘবের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সংক্রমণ বাড়লে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ হিসেবে আসতে পারে।
ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত লকডাউন ১৭ মে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তেলেঙ্গানা রাজ্য কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ২৯ মে পর্যন্ত তা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বলেছেন, মানুষ নিজে থেকেই লকডাউন বাড়ানোর আবেদন করেছে। ভারতে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউন চলবে। সংক্রমণের হার বেশি এমন এলাকায় নানা বিধিনিষেধ বহাল থাকলেও সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম এমন এলাকাগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
প্রিয় পাঠক, দেশ বিদেশের সর্বশেষ আপডেট পেতে আমাদের সাথে ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত থাকুন: মুক্ত ক্যাম্পাস গ্রুপ
মুক্ত ক্যাম্পাস/টিআর