করোনার উৎপত্তি গবেষণাগারে, দাবি ভারতীয় মন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০২০ | ১০:৪০ অপরাহ্ণ | 130 বার পঠিত

করোনাভাইরাস প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট নয় বলে দাবি করে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতীন গদকড়ি বলেছেন, গবেষণাগার থেকে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভাইরাসটি চীনের একটি গবেষণাগার থেকে ছড়িয়েছে বলে দাবি করলেও কোনো তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে ভারতীয় মন্ত্রীর সরাসরি চীনের নাম উচ্চারণ না করে বুধবার সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেছেন, টিকা আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত ভাইরাসটির সঙ্গে টিকে থাকার চেষ্টা চালাতে হবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে করোনাভাইরাস। পরে মহামারির আকার নেওয়া এই ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন, ভাইরাসটি উহানের একটি গবেষণাগার থেকে ছড়িয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ (ডব্লিউএইচও) আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই ভাইরাসটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বলে মনে করেন। বেইজিংয়ের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে মহামারি মোকাবিলার ব্যর্থতা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এদিকে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে ভারতে চলছে কঠোর লকডাউন। এতে ক্ষতিগ্রস্থ ছোট ছোট ব্যবসায়িক খাতগুলোর জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এর প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী নিতীন গদকড়ি বলেন, লকডাউন পরিস্থিতিতে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ। সড়ক পরিবহন, বন্দর, ছোট ও মাঝারি শিল্প, গঙ্গা শোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করছেন নিতীন গদকড়ি। তিনি বিজেপির প্রাক্তন সভাপতিও।

এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিতীন গদকড়ি বলেন, ‘আমাদের করোনার সঙ্গে টিকে থাকার বোঝাপড়া করতে হবে। এটা প্রাকৃতিক ভাইরাস নয়। কৃত্রিমভাবে তৈরি এই ভাইরাস আর এখন সারা বিশ্বের বহু দেশ এর টিকা উদ্ভাবনে গবেষণা করছে। টিকা এখনও তৈরি হয়নি, আশা করা হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা পাওয়া যাবে। একবার পাওয়া গেলে আর সমস্যা থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় সমস্যা হলো শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে। আমাদের ভালো কোনও প্রক্রিয়া দরকার যাতে করে ভাইরাসটি তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যায়। এটা অপ্রত্যাশিত কারণ এই ভাইরাসটি গবেষণাগার থেকে এসেছে, প্রাকৃতিকভাবে নয়। সেকারণে সারা বিশ্ব এখন প্রস্তুত হচ্ছে, ভারত প্রস্তুত হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা প্রস্তুত হচ্ছে। এটা নিয়ে একটা সমাধানে পৌঁছানো গেলে আমরা আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে পারবো। টিকা পাওয়া গেলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’

ভারতের এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস লকডাউনে ভয় পেয়ে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরেছে। তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আবারও খুলে গেলে তারা ফিরে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। গদকড়ি বলেন, ‘আমাদের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে কিন্তু একই সঙ্গে অর্থনৈতিক লড়াইও চালিয়ে যেতে হবে। আমরা গরীব দেশ আর মাসের পর মাস লকডাউন বাড়ানো যাবে না।’

গত মার্চের শেষ দিকে লকডাউন ঘোষণার ফলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আটকা পড়ে লাখ লাখ শ্রমিক। তাদের অনেকেই পায়ে হেঁটে, সাইকেলে বা ট্রাকে চড়ে শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ বাড়ি পৌঁছানোর চেষ্টা করে। অনেকেই রাস্তাতেই মারা যায়। সম্প্রতি আটকা পড়া শ্রমিকদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাড়ি ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৭২২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছে ১৩৪ জন। সব মিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত হলেন ৭৮ হাজার তিন জন এবং মারা গেছে দুই হাজার ৫৪৯ জন। লকডাউনের কড়াকড়ি অনেকটা শিথিল করে দেওয়ার ফলে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে।

প্রিয় পাঠক, দেশ বিদেশের সর্বশেষ আপডেট পেতে আমাদের সাথে ফেসবুক গ্র‌ুপে যুক্ত থাকুন: মুক্ত ক্যাম্পাস গ্রুপ

মুক্ত ক্যাম্পাস/জেপি

পূর্ববর্তী নিবন্ধবড় ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের ঝুঁকিতে বিশ্ব: জাতিসংঘ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আজ বৃহস্পতিবার ৬১ জনের করোনা শনাক্ত