শিক্ষকদের আপত্তির মুখে ভর্তি কমিটির সভা স্থগিত

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক
বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ | ৮:৫৮ অপরাহ্ণ
রাবির ২০১০-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তির সময় বৃদ্ধি

শিক্ষামন্ত্রনালয়ের নির্দেশনার পরও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীকে অব্যাহতি না দেয়ায় শিক্ষকদের আপত্তির মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা স্থগিত করা হয়েছে। সভায় উপস্থিত একাধিক শিক্ষক সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০ টায় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা শুরু হলেই রেজিস্ট্রারকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।

প্রথম প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলাম। পরে বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক খলিলুর রহমান, জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. এনামুল হকসহ অন্যান্য সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেন।

ভর্তি কমিটির সদস্য ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এনামুল হক সভা স্থগিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, সরকারি নির্দেশনায় রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দিতে বলা হলেও ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় রেজিস্ট্রার উপস্থিত ছিলেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই উপাচার্যকে বলেছি সরকারি নির্দেশনা থাকলেও রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। তার উপস্থিতিতে আমরা সভা করবো না। উনাকে বাইরে যেতে বলেন তাহলে আমরা সভা করবো। যদি তাকে নিয়ে সভা করতে চান তাহলে আমরা সভা থেকে বের হয়ে যাবো।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের ওই সভায় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির প্রায় ৬০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা এক দুইজন বাদে সবাই বলেছেন, তাকে অব্যাহতি দেওয়ার পর ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা আয়োজন করতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজের আহবায়ক অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলাম।

তিনি বলেন, সদস্যদের আপত্তির মুখেও উপাচার্য কিছুতেই রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীকে রেখে সভা করতে রাজি ছিলেন না। যুক্তিতর্ক দেওয়া শুরু করেন তিনি। তখন বাড়ি দখলে রেখে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করার বিষয়টি তুলে আমরা তার উপস্থিতিতেও সভা করবো না বলে জানায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন কি করবেন।

অধ্যাপক সুলতান বলেন, অন্যান্য চিঠি আসলে তড়িঘড়ি করে সিন্ডিকেট ডাকেন ছুটির দিনে। নিয়োগ বোর্ড তড়িঘড়ি করে বসাতে পারেন। তবে রেজিস্ট্রারের অব্যাহতির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট ডাকতে পারেননি এই অজুহাত দিচ্ছেন। তার মানে আপনার অনিচ্ছা। তাই আপনার সাথেও আমরা সভা করতে পারবো না।

এরপর উপস্থিত শিক্ষকদের সবার আপত্তির মুখে সভাটি ১০টা ৪০ মিনিটে স্থগিত করতে বাধ্যহন উপাচার্য।

শিক্ষকরা দাবি জানিয়েছেন, নির্দেশনা মোতাবেক অধ্যাপক এম এ বারীকে অব্যাহতি দিলে যেকোনো সময় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভা আয়োজন করতে পারে কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি না দিলে ভর্তি কমিটির সভা হচ্ছে না বলেই জানাচ্ছেন শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানও সভা স্থগিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি কোনো কারণ উল্লেখ করেননি।

সভায় উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান, সহ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এম এ বারী, ১০ জন অনুষদের ডিন, ১২ জন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক, ১৮ জন আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ, ৫৯ জন বিভাগীয় সভাপতি, দুজন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, আইসিটি সেন্টারের পরিচালক, প্রক্টর, জনসংযোগ প্রশাসক, ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, হিসাব পরিচালকসহ প্রায় ১০০ শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক মো. আজিজুর রহমান বলেন, অনিবার্য কারণে আজকের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাটি স্থগিত হয়েছে। খুব দ্রুতই সভার পরবর্তী তারিখ জানানো হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধবেরোবিতে পতাকা অবমাননা, থানায় ৮ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ