বেরোবি উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

বেরোবি প্রতিনিধি:
বৃহস্পতিবার, ০৪ মার্চ ২০২১ | ৬:৩০ অপরাহ্ণ
বিজয় দিবসেও ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ভিসি কলিমুল্লাহ!

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে নিয়ে মিথ্যাচার করায় উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

মশিউর রহমান বলেন, উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিত থেকে রেকর্ড গড়েছেন। উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর ১৩৫৬ দিন অতিবাহিত হয়েছে তার। এর মধ্যে তিনি ১১১৯ দিনই ক্যাম্পাসে না এসে ঢাকায় ছিলেন। অথচ উপাচার্য ঢাকায় বসে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০-২২ ঘণ্টা কাজ করেন বলে মিথ্যাচার করেছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হয়েও অনুপস্থিতি থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছামতো পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘনসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গ উপাচার্য কলিমউল্লাহ সরাসরি জড়িত।

এদিকে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষামন্ত্রী সম্পর্কে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ যে বক্তব্য রেখেছেন তা অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে।

এর আগে বেরোবি উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে ৪৫টি অভিযোগ তদন্তের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি ১০তলা ভবন ও ১টি স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজে উপাচার্যের অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে ইউজিসির একটি তদন্ত কমিটি। এর জন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেছে ওই কমিটি।

জানা যায়, উপাচার্যের অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ৪৫টি অভিযোগ তুলে ধরে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান। এখন ওই ৪৫ অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত করতে রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাচ্ছে ইউজিসির তদন্ত কমিটি।

এ নিয়ে ইউজিসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গত মঙ্গলবার হাতে পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক। এতে জানানো হয়েছে, ৪৫টি অভিযোগ তদন্তে ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে একটি কমিটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবেরোবি উপাচার্যের বক্তব্য ভিত্তিহীন: শিক্ষা মন্ত্রণালয়