বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

বেরোবি প্রতিনিধি:
শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৬:৪৪ অপরাহ্ণ
বেরোবিতে গণিত অলিম্পিয়াডের রংপুর অঞ্চলের প্রতিযোগিতা শুক্রবার

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রশাসনিক ভবন ও ভিসির বাংলোতে প্রবেশ এবং অবস্থান করে যেকোনো কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া এসব ভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারবেনা উল্লেখ করে এক অফিস আদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৭৫তম বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এসব নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশে প্রশাসনিক ভবন, ভিসির বাংলো, একাডেমিক ভবন এবং শ্রেণিকক্ষের সামনে মিছিল-মিটিং, অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ প্রদর্শন, স্লোগান, বক্তব্য প্রদান ও মৌন মিছিলসহ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে তালা লাগিয়ে কোনো প্রতিবাদের কর্মকাণ্ডেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও উল্লেখ করা করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশ জারি করা হলেও বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি সামনে আসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে প্রশাসনিক, একাডেমিক ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আন্দোলন করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি সিণ্ডিকেট সভা ডেকে নিষেধাজ্ঞার এই আদেশ জারি করেন।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞা জারির খবর প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিন্দা জানিয়ে দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। এনিয়ে ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মামাধ্যমে সরব হয়েছেন ছাত্রলীগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠনও।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, যেহেতু আমাদের ছাত্র সংসদ নেই, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাস্তবতায় আসলে দেখা যাবে যে প্রশাসন আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত হলে শিক্ষার্থীরা কখনো আন্দোলন-সংগ্রামে সামিল হয় না। বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে শিক্ষার্থীদের শাসনের বিপরীতে প্রশাসনের জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে।

শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কাজে প্রশাসনিক ভবনে যেতে হয়, অনুমতি কোথায় নিবে? আর, নিতে হবে কেন!। ভিসি ও তার অনুগামীদের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই যারা আইন ভঙ্গ করে চলেছেন, তাঁরাই আবার আইন তৈরি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে মতো একটি প্রতিষ্ঠানে প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে বলেও দাবি করেন। তার মতে, উপাচার্য, রেজিস্ট্রার বছরের পর বছর অনুপস্থিত থেকে নিজেরাই রাষ্ট্রীয় আইন ভঙ্গ করে চলেছেন, এইসব হঠকারী সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আতিউর রহমান, রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিপ্রবিতে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত
পরবর্তী নিবন্ধঅনার্স তৃতীয় বর্ষের বিএসসি গ্রুপের ফল প্রকাশ