প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার দাবিতে চবিতে বিক্ষোভ

চবি প্রতিনিধি:
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৯:০১ অপরাহ্ণ | 161 বার পঠিত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) গাছ কাটা বন্ধ করা ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার দাবিতে মানবন্ধন ও মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৭দফা দাবি পেশ করে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বেলা ১২টার দিকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

মানবন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে দর্শন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সব্যসচী জহির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গাছ পালা কেটে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন, পাহাড় সব উজার করে ফেলছে। গাছ কাটার যে মহাউৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে আমরা চাই অনতিবিলম্বে তা বন্ধ হোক।

রিটু রায় নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, গাছ কাটুরিরা শুধু গাছ কাটছেনা, তারা এই গাছ নিয়ে যাওয়ার জন্য পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরী করছে। অথচ এই পাহাড় আমাদের গর্ব।

নাট্যকলা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মুশফিকুদ্দিন ওয়াসি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে একটি দেশে কম্পক্ষে ২৫ শতাংশ বনায়ন থাকতে হয় কিন্তু আমাদের দেশে সে পরিমাণে বনায়ন নেই। বরং যা আছে তা আরো ধ্বংস করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সামনের দিনগুলোতে বাঁচতে কষ্ট হয়ে যাবে।

অর্থনীতি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেওয়ান তাহমিদের সঞ্চালনায় এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এসময় শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে সেভ দ্যা স্টুডেন্ট, পাঠচক্র বিষয়ক সংগঠন প্রতীতি, ক্লিন ক্যাম্পাস, বিচ্ছু, হুইসেল, আবৃত্তি মঞ্চ,১/২৪ সোশ্যাল মুভমেন্ট।

মানবন্ধন শেষ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে যায়। সেখানে তাদের পেশকৃত ৭দফা দাবি সংশ্লিষ্ট একটি খসড়া উপাচার্য বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস.এম মনিরুল হাসানের কাছে দেন।

দাবিগুলো হলো-
১. সৌন্দর্য বর্ধন, রাস্তা সম্প্রসারণ ইত্যাদি অজুহাতে ক্যাম্পাস এরিয়ার কোনো স্থানে প্রশাসন বা অন্য যেকারো উদ্যোগে কোনো গাছ কাটা যাবে না।

২. গাছ কেটে ক্যাম্পাসে রাখার ও ক্যাম্পাসের উপর দিয়ে গাছ পরিবহণের অনুমতি দেয়া যাবে না। এটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

৩. গাছকাটা প্রতিরোধ ও পরিবেশ রক্ষায় অবিলম্বে আরেকটি কমিটি করতে হবে এবং তা কার্যকর রাখতে হবে।

৪. ক্যাম্পাস এরিয়ার বাইরের বন-পাহাড়ে গাছাকাটা প্রতিরোধ ও জীববৈচিত্র রক্ষা করতে বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

৫.  আগামী এক বছরের মধ্যে ক্যাম্পাসের সমস্ত বিলুপ্তপ্রায় এবং বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের তালিকা করতে হবে। তাদের সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে হবে।

৬.  মাটি, পানি, বাতাস তথা বনজ এলাকার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় কাঠের উদ্দেশ্যে কিংবা বিভিন্ন ধরনের বিদেশি সংস্থার ফান্ডিংয়ে ইউক্যালিপটাস, আকাশমণি, মেহগনিসহ কোনো প্রকারের বিদেশি প্রজাতির বনায়ন করা যাবে না।

৭. অবৈধভাবে গাছকাটা ও তা পরিবহণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যতেও কেউ গাছকাটা ও পরিবহণের সাথে জড়িত হলে আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনে পাহাড়, কলা অনুষদের পেছন থেকে গাছ কাটা হচ্ছিল। যা গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তারই প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচী পালন করে।

মুক্ত ক্যাম্পাস/তামিম/জেডআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধববিতে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন
পরবর্তী নিবন্ধঅপ্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড দেওয়া হবেঃ ইসি