প্রদীপের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সাংবাদিক কারাবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বুধবার, ১২ আগস্ট ২০২০ | ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর মিরপুর, কক্সবাজার মডেল থানা ও টেকনাফ নিজের থানার পুলিশকে ব্যবহার করে স্থানীয় সাংবাদিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে সমালোচিত ওসি প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে। ফরিদুল মোস্তফা নামে স্থানীয় ওই সাংবাদিক গত বছরে ‘টেকনাফ থানায় টাকা না পেলে ক্রসফায়ার দিচ্ছে ওসি প্রদীপ’- শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ করেন। এরপরই সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান পুলিশ প্রশাসনের রোষানলে পড়েন।

পরে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের পরিকল্পনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর থেকেই পুলিশি নির্যাতনে ভয়ে পালিয়ে বেড়ান ওই সংবাদকর্মী। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাবর আবেদন করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। ঢাকা মিরপুরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। তখন ওসি প্রদীপ মিরপুর থানার পুলিশকে ব্যবহার করে তাকে টেকনাফে নিয়ে আসেন।

এরপর তার ওপর চলে অকথ্য নির্যাতন। তার চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। পরে তাকে কক্সবাজার মডেল থানার সহযোগিতায় ওই থানা এলাকার বাসভবনে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে জেলে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।

নির্যাতিত এ সাংবাদিক দৈনিক কক্সবাজারবাণী ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘জনতারবাণী ডটকমের’ সম্পাদক ও প্রকাশক। প্রদীপের নির্যাতনে চোখ হারানোর অবস্থা তার। এই ঘটনার পর থেকে তাকে কোনো ধরনের চিকিৎসা না দেয়ার অভিযোগ করেছে পরিবার। যার কারণে চোখের আলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম। ঘটনার সময় স্থানীয় কোনো সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেননি। কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তখন তারা কেউ ওসি’র বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাননি। তার বিরুদ্ধে সংবাদ করলেই নির্যাতন করতো এই ওসি।

অভিযোগ রয়েছে, ওসি প্রদীপের ক্ষোভের শিকার হয়ে ১১ মাস ধরে ৬টি মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে কারাবাস করছেন ফরিদুল। তিনি এখন কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন। জানা গেছে, ওসি ও তার সহযোগীদের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করায় গত বছরের ২১শে সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে ফরিদুল মোস্তফাকে ধরে টেকনাফ থানায় নিয়ে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালান প্রদীপ কুমার। সে সময় তার চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ ছাড়া তার হাত-পা ভেঙে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ফরিদুলকে নিয়ে কথিত অভিযানে গিয়ে কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়ায় বাড়ি থেকে গুলিসহ ২টি অস্ত্র, ৪ হাজার পিস ইয়াবা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার দেখায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশ।

ফরিদুল মোস্তফার স্ত্রী হাসিনা আক্তার বলেন, গত বছরের ২১শে সেপ্টেম্বর মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের শাহ আলীবাগের প্রতীক হাসনাহেনা বাসায় অভিযান চালিয়ে কথিত চাঁদাবাজির মামলায় ফরিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিরপুর মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় টেকনাফ ও কক্সবাজার থানা পুলিশ এই অভিযানে অংশ নেয়।

মুক্ত ক্যাম্পাস/কেআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাইকোর্টে বিচারপতি-আইনজীবীদের যে পোশাক পড়তে হবে
পরবর্তী নিবন্ধদেশে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আজ