প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হওয়া তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে সিনেট সম্ভবত এই বিচারের ব্যাপারে সাধারণ সম্মতি নেয়া শুরু করবে। সিনেটের সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাটিকদের নেতা চাক শুমার তেমনটাই অনুরোধ করেছেন। রিপাবলিকান সেনেট নেতা মিচ ম্যাককনেলও হয়তো এই প্রস্তাবে সায় দেবেন।

ডেমোক্র্যাটরা বলছে এই অভিসংশন বা ইমপিচমেন্ট ট্রাম্পের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করবে, যার ফলে ভোটাররা তাকে ভোট দিতে গিয়ে সঙ্কোচের মধ্যে পড়বে। তবে জনসমীক্ষার ফলাফল বলে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের পক্ষে ও বিপক্ষের মতামত অভিশংসন সংক্রান্ত গত কয়েকমাসের নাটকে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। ২০২০ সালের নির্বাচনে যেরকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা ছিল সেরকম, এখনো লড়াই হবে।

ট্রাম্প চূড়ান্তভাবে অভিসংশিত হলে যা ঘটতে পারে
প্রথমত, মাইক পেন্স ট্রাম্পকে ভাইস প্রেসিডেন্ট বানাতে চাইলে সেই প্রস্তাব নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদিত হতে হবে। ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রতিনিধি পরিষদ স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্পকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হতে দিতে চাইবে না। এমন সম্ভাবনাও আছে যে, ট্রাম্পকে সিনেট তার দায়িত্ব থেকে অপসারণ করার সময়ই এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করবে যার ফলে ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্বে আসার সুযোগ হারাবেন। কিন্তু সিনেট যদি তা না করে, তাহলে মাইক পেন্স সহজেই ট্রাম্পকে ভাইস প্রেসিডেন্ট বানাতে পারবেন। তখন ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রেও ট্রাম্পকে বাধা দেয়া সম্ভব হবে না।

ডেমোক্র্যাটদের বক্তব্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসিত হওয়ার প্রায় কোনোরকম সম্ভাবনা না থাকলেও তারা এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গেছে শুধু প্রেসিডেন্টকে তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী করার উদ্দেশ্য থেকে।

ক্ষমতার অপব্যবহার করার দায়ে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালনা না করলে হয়তো তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনকে ঘিরে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতেন যা ডেমোক্র্যাটদের আরো ক্ষতিগ্রস্ত করতো। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বিবেচনা করলেও, দলের সমর্থকদের আনুগত্য ধরে রাখতে ট্রাম্পের অভিসংশন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা প্রয়োজন ছিল ডেমোক্র্যাটদের।

প্রতিনিধি পরিষদের ভোটের ফলে মার্কিন সংবিধান অনুসারে সিনেটে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে, তবে এর মেয়াদ এবং সময় নির্ভর করছে সিনেটের ওপর।
সিনেট কোনো এক সময় এই বিচার সংক্রান্ত সাধারণ নিয়ম এবং অন্যান্য মাপকাঠি ঠিক করবে – তবে কোনো না কোনো ধরণের বিচার পরিচালিত হবেই।

একটি বিষয়ে কিছুটা অস্পষ্ট আইনি বিতর্ক রয়েছে যে নিম্নকক্ষের ভোটের পরই সেনেটের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়, নাকি নিম্নকক্ষের প্রতিনিধিদের আনুষ্ঠানিকভাবে ইমপিচমেন্টের কাগজপত্র সিনেটে ‘পেশ’ করতে হয়।

এটি এই জন্য জরুরি, কারণ এমন একটা ধারণা রয়েছে যে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি যতক্ষণ না পর্যন্ত নিশ্চিত হচ্ছেন যে সিনেট নিরপেক্ষ বিচার আয়োজন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি অভিশংসনের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে পারেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

মুক্ত ক্যাম্পাস/এমআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
পরবর্তী নিবন্ধহতাশা দিয়ে জলবায়ু সম্মেলন শেষ