নড়াইলের লোহাগড়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট করছে।
এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ৯৫ নং টি চরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারা শনিবার থেকে শুরু করেছে এ ধর্মঘট।
স্থানীয় ও উপজেলার সূত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার ৯৫ নং টি চরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৩০।
গত ১ জানুয়ারি সকালে শিক্ষার্থীদের বই দেওয়ার সময় দুমাস অসুস্থ থাকায় দুই বিষয়ে ফেল করা এক শিশুকে চতুর্থ শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করবার জন্য ওই শিশুর অভিভাবক অনুরোধ করেন।
তখন প্রধান শিক্ষক শামীম আরা বলে ওঠেন ‘সভাপতির বাপের ক্ষমতা নাই আপনার সন্তানকে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করে বই দেবে।’ একথা শুনে সকলে বিস্মিত হয়ে পড়েন। মঞ্চ থেকে নেমে আসেন সভাপতি।
পরে সহকারী শিক্ষকরা দুঃখ প্রকাশ করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে নিয়ে বই বিতরণ করেন। পরে ২ জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ে ডিবি পুলিশ গিয়ে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য শোনেন।
এরপর শুক্রবার সকালে নড়াইল পুলিশ কালনাঘাট থেকে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হেমায়েত হোসেনকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে বক্তব্য নেওয়ার পর পুলিশ হেমায়েত হোসেনকে ছেড়ে দেয়। সভাপতিকে আটকের পরের দিন শনিবার শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট শুরু করেছে।
প্রধান শিক্ষক শামীম আরা বলেন, ‘আমি সভাপতির দাদা তুলে কথা বলেছি, বাপ তুলে নয়।’
সভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্যা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমার বাপ তুলে কথা বলেছেন। প্রধান শিক্ষক এসপি সাহেবের নিকট অভিযোগ দিয়ে পুলিশ দিয়ে আমাকে আটক করিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট করেছে।’
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নুপুর অভিযোগ করে বলে, ‘প্রধান শিক্ষক ঠিকমতো পড়ান না। মারপিট করেন।’
অভিভাবক শহর আলী অভিযোগ করেন, ‘প্রধান শিক্ষক শিশুদের নির্যাতন করেন। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেছে।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ সাইদুজ্জামান বলেন, ‘সভাপতিকে পুলিশে আটকের কথাও শুনেছি। ধর্মঘটের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’
নড়াইলের পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন পিপিএম (বার) বলেন, ‘সভাপতিকে আটক করেছিলাম। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির বক্তব্য নিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।’
মুক্ত ক্যাম্পাস/টিআর