নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ১৬ আসামীকে মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৯ | ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ | 237 বার পঠিত

বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে সব আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি মানুষের সামনে আনার জন্য সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ।

আজ বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও বাদীপক্ষের খণ্ডন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৪ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেন।

মামলার ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন, প্রভাষক আফছার উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, হাফেজ আবদুল কাদের, ছাত্র নুর উদ্দিন, ইফতেখার উদ্দিন রানা, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, মো. শামীম, সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, আবদুর রহিম শরীফ, মহিউদ্দিন শাকিল, ইমরান হোসেন মামুন, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন্নাহার মনি, শাহাদাত হোসেন শামীম।

জানা যায়, ২৭ মার্চ সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। একই দিন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে।

পরবর্তীতে ৬ এপ্রিল নুসরাতের আলেম পরীক্ষা চলাকালীন কৌশলে নুসরাতকে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় তার সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি। ওখানে অপেক্ষায় ছিল বোরকা পরা আরও চারজন। তারা নুসরাতকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। নুসরাত রাজি না হওয়ায় তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে।

আগুনে তার শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। নুসরাতের মৃত্যুর পর তার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে ফেনীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এদিকে, রায়কে ঘিরে বুধবার রাত থেকে নুসরাতদের বাড়িতে পাহারা জোরদার করা হয়েছে। প্রহরায় নিয়োজিত আগের তিনজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে আরও ৯ সদস্যকে যুক্ত করা হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত লোকজনও রেজিস্ট্রার খাতায় সই না করে ওই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন না। গত ৭ এপ্রিল থেকে বাড়িটিতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়।

মুক্ত ক্যাম্পাস/টিআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ এশিয়া কাপের সময়সূচি প্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধগাজীপুরে কারখানায় আগুন