নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
শুক্রবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৮:৩০ অপরাহ্ণ
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেল বাংলাদেশ

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচও জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ৪ রানের ব্যবধানে সফরকারীদের হারিয়েছে টাইগাররা। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান তুলতে সমর্থ হয় সফরকারীরা।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪১ রান করে মাহমুদউল্লাহর দল। জবাব দিতে নেমে নিউজিল্যান্ডও পেয়েছে রানের দেখা। তবে মেলেনি জয়। অধিনায়ক টম লাথামের ফিফটিতে খুব কাছে গিয়েও ১৩৭ রানে থামে সফরকারীরা। ৪ রানের এই জয়ে ৫ ম্যাচ সিরিজে ২-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

আগে যেখানে দলটির বিপক্ষে ১০ ম্যাচে ছিলনা কোনো জয়, সেই কিউইদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

রান তাড়ায় ব্যাট হাতে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। নাসুম-মেহেদীর প্রথম দুই ওভারে ১০ রান তুলেছিল কিউইরা। কিন্তু বেশিক্ষণ ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি সফরকারীরা।

তৃতীয় ওভারে বল করতে এসেই প্রথম আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। প্রথম বল ডট তারপরের বল ছক্কা, এরপরই রাচীন রবিন্দ্রর স্টাম্প উড়িয়ে নিজেদের বিশেষত্ব জানান দিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। জাতীয় দলের হয়ে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা রবীন্দ্র ফিরে গেছেন ৯ বলে ১০ রান করে। ১৬ রানে প্রথম উইকেট হারাল নিউজিল্যান্ড।

সাকিবের পর উইকেটের দেখা পেলেন মেহেদীও। নিজের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে এসেই টম ব্লান্ডেলকে বোকা বানিয়ে সোহানের স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন। ব্লান্ডেল ৮ বলে খেলে করেছেন ৬ রান। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান তোলে সফরকারীরা।

৭ম ওভারে আক্রমণে এসেই ছন্নছাড়া মুস্তাফিজকে দেখা গেল। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর কিউইদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কিছুটা খরুচে হলেও দুই উইকেট তুলে নিয়ে নামের প্রতি সুবিচার করেছিলেন। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম ওভারেই দিলেন ৯ রান।

দুই উইকেট হারানোর পর কিউই অধিনায়ক টম লাথাম ও উইল ইয়াংয়ের ব্যাটে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। এদিকে, পার্টনারশীপ ভেঙে বিপদ কমাতে চাইছিলেন মাহমুদউল্লাহ বাহিনীও। আর তাই ফিরিয়ে আনেন বিশ্বসেরা সাকিবকে। আস্থাও রাখলেন তিনি। জুটি ভাঙলেন সাকিব। টম ল্যাথামের সঙ্গে উইল ইয়াংয়ের জুটি টানছিল নিউজিল্যান্ডকে। ইয়াংকে ফিরিয়ে ৪৩ রানের জুটি ভাঙলেন সাকিব। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েছেন ইয়াং। আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে ২২ রান করেন। ৬১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

১৩ তম ওভারে মুস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন কলি ডি গ্র্যান্ডহোম। জোরালো আবেদনের মুখে আম্পায়ার আউটও দিয়ে দেন। কিন্তু শেষমেশ রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এই কিউই ব্যাটসম্যান। এদিকে, নিজের আগের ওভারে দিয়েছিলেন ১২ রান, ১৪তম ওভারে এসে আবার সাইফউদ্দিন দিলেন ১১ রান। ওভারের শেষ বলে হাঁটু গেড়ে বসে মিডউইকেটে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন লাথাম।

সাকিবের পর ব্রেকথ্রু এনে দিলেন নাসুম আহমেদও। ২৪ রানের জুটি ভেঙে ফেরালেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে। সাবধানী ক্রিকেট খেলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন লাথাম-গ্র্যান্ডহোম জুটি। বাজে বলে উচিত শাস্তি আর ভালো বলে সিঙ্গেল আদায় করে ধীরে ধীরে ব্যবধান কমাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু এদিন উইকেট শূন্য থাকা নাসুম যেন উইকেট ভাঙার পণ করেই আক্রমণে এলেন। আউট হওয়ার আগে ১০ বলে ৮ করেছেন গ্র্যান্ডহোম।

এদিকে, নাসুমের পর নিজের দ্বিতীয় শিকারের দেখা পেলেন মেহেদীও। ৫ বলে ৬ করা হ্যানরি নিকোলসকে মুশফিকের হাত ক্যাচ দিয়ে ফিরিয়েছেন। পুরো ইনিংসজুড়েই বাংলাদেশের বোলারদের সামনে বড় বাধা হয়েছিলেন কিউই কাপ্তান টম লাথাম। অন্য পাশে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপাশ আগলে রেখেছিলেন। তবে ১৯ তম ওভারে এসে রান আউটের শিকার শিকার হতে গিয়েও সোহানের ভুলে জীবন ফিরে পেয়েছেন।

তবে লাথাম শেষ পর্যন্ত থেকেও দলকে জেতাতে পারেননি। নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ৫ উইকেটে ১৩৭ রান করে। লাথাম অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ৬৫ রান করে। অন্যদিকে, আরেক ব্যাটসম্যান কোল ম্যাককঞ্চি ১২ বলে করেছেন ১৫ রান।

এর আগে মিরপুরের মন্থর উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে দুই ওপেনার লিটন ও নাঈমে ভর করে অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের জুটিই পথ দেখায় টাইগার বাহিনীকে। বাংলাদেশের ইনিংস থামে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৪১ রানে।

প্রিয় পাঠক, শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ক সর্বশেষ আপডেট পেতে মুক্ত ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে লাইক দিন। লিঙ্ক : https://www.facebook.com/Muktocampus

পূর্ববর্তী নিবন্ধঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে যা জানালেন উপাচার্য
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ঢাবি, বাকৃবি ও বুয়েট