জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাইডেন, নেভাদা জিতলেই হোয়াইট হাউস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর ২০২০ | ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ

সুইং স্টেট (দোদুল্যমান) উইসকনসিনের পর মিশিগানেও জয় পেলেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন। এই অঙ্গরাজ্যের ১৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাচ্ছেন তিনি। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই অঙ্গরাজ্যে জয় পেয়েছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৬৪ ইলেক্টোরাল ভোট নিয়ে অবস্থান করছেন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। এখন এগিয়ে থাকা আরেক ব্যাটলগ্রাউন্ড নেভাদায় (৬টি ইলেক্টোরাল ভোট) জয় পেলেই ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট পূর্ণ হয়ে যাবে। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে ৩টি রাজ্যের ভোট গণনা নিয়ে আপত্তি তুলে আদালতে যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

নেভাদায় বর্তমানে মাত্র দশমিক ছয় শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছেন বাইডেন। সেখানে এখন পর্যন্ত গণনা হওয়া ভোটের ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। তুমুল লড়াই হওয়া এই রাজ্যটির জয়-পরাজয়ের ওপর পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন তার অনেকখানি নির্ভর করছে।

এছাড়া এখন পর্যন্ত যেসব রাজ্যের ভোটের ফলাফল পাওয়া যায়নি সেগুলোর মধ্যে আলাস্কায় রয়েছে তিনটি ইলেক্টোরাল ভোট, জর্জিয়ায় ১৬টি, নর্থ ক্যারোলিনায় ১৫টি এবং পেনসিলভানিয়ায় ২০টি। নেভাদায় বাইডেনের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর এগুলোর সবগুলোতেও যদি ট্রাম্প জেতেন তাহলেও তার ইলেক্টোরাল ভোট দাঁড়াবে ২৬৮টিতে। ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করতে পারবেন না তিনি।

তবে বাইডেন এগিয়ে থাকার সময়ই নিজেকে জয়ী দাবি করে ট্রাম্প ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন। এরইমধ্যে মিশিগান, উইসকনসিন ও পেনসিলভানিয়ার গণনায় আপত্তি তুলে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছে ট্রাম্প শিবির।

সিএনএন ও এএফপির খবরে বলা হয়েছে, মিশিগানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন বাইডেন। এই জয়ের ফলে সব মিলিয়ে বাইডেনের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৪। আর ট্রাম্প এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ২১৪ ভোট। মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজন ২৭০ ভোট। এর মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে বাইডেনের প্রয়োজন আর মাত্র ছয়টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।

ফক্স নিউজ বলছে, মিশিগানে ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে বাইডেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প পেয়েছেন ২৬ লাখ ১৮ হাজার ৯৩ ভোট। ভোট গণনার শুরু থেকেই এখানে তুমুল লড়াই চলছিল দুই প্রার্থীর মধ্যে। কখনো ট্রাম্প এগিয়েছেন, কখনো বাইডেন। তবে শেষ হাসি হাসলেন বাইডেন।

সুইং স্টেটে এই জয় তাঁকে হোয়াইট হাউসের পথে অনেক দূর এগিয়ে নিল। বিপরীতে এই হার ট্রাম্পকে অনেকখানি পিছিয়ে দিল। ২০১৬ সালে মিশিগানে তৎকালীন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছিলেন ট্রাম্প।

গণমাধ্যমগুলোতে মিশিগানে বাইডেনের জয়ের খবর আসার কিছু সময় আগে ট্রাম্প শিবির এই অঙ্গরাজ্যে মামলা করার কথা ঘোষণা করে। এক বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্প শিবির মামলা করার কথা বলেছে। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের ব্যবস্থাপক বিল স্টেপিন এক বিবৃতিতে বলেন, মিশিগানের আইন অনুযায়ী ভোট গণনার নির্ধারিত জায়গায় ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের কাউকে সেভাবে উপস্থিত থাকার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সে কারণে তাদের পক্ষে ব্যালট পেপার খোলা ও ভোট গণনার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ সম্ভব হয়নি।

এদিকে মিশিগানের আগে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যেও জয়ী হন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। এই অঙ্গরাজ্যে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। এগুলো যুক্ত হচ্ছে বাইডেনের ঝুলিতে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই অঙ্গরাজ্যে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প। ফক্স নিউজ বলছে, উইসকনসিনে বাইডেন পেয়েছেন ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৫৪৮ ভোট। আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প পেয়েছেন ১৬ লাখ ১০ হাজার ৭ ভোট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের জন্য লড়েছেন প্রার্থী দু’জন। জয় পেতে দরকার দুই-তৃতীয়াংশ ইলেক্টোরাল, অর্থাৎ ২৭০টি।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রায় ২১ কোটি ভোটার ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন প্রায় ১০ কোটি ভোটার। যা গত একশো বছরের মধ্যে আগাম ভোটের ক্ষেত্রে একটা রেকর্ড।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যালয় খোলার বিষয়ে যা বললেন প্রাথমিকের ডিজি
পরবর্তী নিবন্ধসিনেটে ফের রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ