জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙলো, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন?

আশরাফুল আলম খোকন
সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ | ৮:২৩ অপরাহ্ণ

বেয়াদবি হলে ক্ষমা করবেন…

এই ৪২ জনের নাম নিতে চাই না। কখন আবার বেয়াদব খেতাব পেয়ে বসি। ওনারা বিদ্যা বুদ্ধিতে অনেক উপরের মানুষ। ওনাদের নিয়ে কিছু বলার ইচ্ছাও ছিলোনা, তবুও বিবেকের তাড়নায় লিখলাম। কালে কালে জনগণই তাদের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করেন। ১/১১ এর মত কোন ঘটনা ঘটলেই সবকিছু স্পষ্ট হয়ে আসে।

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তাঁরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ওনাদের নাকি বিস্তর অভিযোগ। ওনাদের ক্ষোভের মাত্রাটা এতটাই অগোছালো ছিল যে, গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণের জন্য যেখানে ২ কোটি টাকা বরাদ্দই ছিলোনা সেখানে পুরা ২ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগও তারা এনেছেন। মনে হচ্ছে,কেউ একটা ফরমায়েশি কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে আর ওনারা তাতে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন।

ধরে নিলাম, আপনারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছেন,অসদাচরণের অভিযোগ পেয়েছেন। আর সেটা দেখেই আপনারা একেবারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেলেন। খুবই ভালো কথা। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে অনিয়ম হলে সোচ্চার হওয়াটা আপনার আমার নাগরিক দায়িত্ব। আপনারা হয়েছেন। কারন, আমার বিশ্বাস আপনারা চাঁদ তারা নয়, লাল সবুজের বাংলাদেশটাকেই ভালোবাসেন।

ঐক্যবদ্ধ হওয়াতে ব্যক্তিগতভাবেও আমি খুশি। ওনারা মনে করেছেন যে, দেশের যেকোনো প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের খবর শুনে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। এইভাবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে রাষ্ট্রের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুতি ঘটবেনা।

শ্রদ্ধেয় ৪২ জনের কাছে আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়। যেই তাড়না থেকে এই লেখা। কিছুদিন আগেও মৌলবাদী গোষ্ঠী দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য মুছে ফেলতে চেয়েছে, ভাস্কর্য ভেঙে দিতে চেয়েছে, জাতির পিতার ভাস্কর্য ভেঙে দিয়েছে, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছে- তখন আপনারা কোথায় ছিলেন ? এই দেশের ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন বিলিয়ে দিয়ে ফয়সালা করে গিয়েছে যে, এই দেশ হবে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, সবধর্মের মানুষ এই দেশে সমান অধিকার নিয়ে বাস করবে। দেশের এই অসাম্প্রদায়িক চরিত্র মুছে দেয়ার হুঙ্কার যখন আসে তখন কেন আপনাদের বিবেকের কলম কথা বলে না ?

যদি ভয় পান সেটাও বলেন। যদি চাঁদ তারার বাংলাদেশ চান সেটাও পরিষ্কার করে বলেন। দেশের জনগণ আপনাদের আসল রূপ’টা জানুক। স্বাধীন দেশের অস্তিত্বের চেয়ে নির্বাচন কমিশন যখন বড় হয়ে যায় তখনই আপনাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এই প্রশ্ন আমার মনেও উঠেছে- তাই এই লেখা। বেয়াদবি হলে ক্ষমা করবেন।

লেখক: আশরাফুল আলম খোকন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাসানচর যাচ্ছে আরও ১ হাজার ১৩৪ রোহিঙ্গা
পরবর্তী নিবন্ধচুয়েট একাডেমিক কাউন্সিলের ১২৫তম সভা অনুষ্ঠিত