জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
বুধবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ
দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবারের বন্যা : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা, ভূমিধস, হিমবাহে ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে দক্ষিণ এশিয়া। এমনকি তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায়) বাড়লেও বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। দুর্যোগে শিশু, নারী, বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের ঝুঁকির বিষয়টিও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।

তিনি বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বরাদ্দ বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয়ভাবে অবদানের যে প্রতিশ্রুতি দেশগুলো দিয়েছিল তার পরিমাণও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, গত এক দশকে দক্ষিণ এশিয়ার অর্ধেক জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ প্রায় ৭০ কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আরেকটি এসে আঘাত হানে, ফলে যে কোনো অগ্রগতি উল্টে যায়। এই চক্র ভাঙতে দক্ষিণ এশিয়াকে দুর্যোগে টিকে থাকার সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার ২০০৯ সালের বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে নানা পদক্ষেপ এবং অভিযোজন কর্মসূচি নিয়েছে। ২০০৯ সালে আমরা জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল প্রতিষ্ঠা করেছি এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ পর্যন্ত ৪৩ কোটি ডলার নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দিয়েছি। অভিযোজন বিষয়ক কর্মকাণ্ডে সরকার ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর জিডিপির এক শতাংশ, অর্থাৎ ২০০ কোটি ডলার করে ব্যয় করছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ‘অনন্য নজির’ স্থাপন করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় এখানকার জনগণ বারবার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। তারপরও পরিবর্তন করার মতো এখনও অনেক কিছু আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী সব দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং একসঙ্গে কাজ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বর্তমান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের সঙ্কট মোকাবেলায় আমাদের একে অপরকে ছেড়ে যাওয়া উচিত নয়।

মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশে বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্রের (গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-জিসিএ) আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশে কার্যালয় চালু করতে সহযোগিতা করায় তিনি জিসিএর সভাপতি বান কি মুনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমি আশা করি, এই কার্যালয়ের মাধ্যমে অভিযোজন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা এবং কর্মসূচি বিনিময় হবে। এ অঞ্চলের অভিযোজন বিষয়ক সমস্যা সমাধান এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে কাজ করবে এই কার্যালয়। ইউএনএফসিসিসি’র জলবায়ু বিষয়ক দুটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম’ এবং ‘ভালনারেবল-২০’ এর সভাপতি পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতায় জিসিএর ঢাকা কার্যালয় সমর্থন দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

মুক্ত ক্যাম্পাস/জেপি

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনাকালেও পিছিয়ে নেই শাবি’র উন্নয়ন কাজ
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক: বান কি মুন