১০ দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের ২১ শাখার কার্যক্রম স্থগিত

এমসি রিপোর্ট
শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০ | ৮:০৬ অপরাহ্ণ | 154 বার পঠিত
১০ দাবিতে ছাত্র অধিকারের ২১ শাখার কার্যক্রম স্থগিত

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ২১টি ইউনিটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে উল্লেখকৃত একটি দরখাস্ত গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। তবে আবেদনটি ভুয়া বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানিয়েছেন ১ নং ‍যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর।

আজ শনিবার (১৭ অক্টোবার) গণমাধ্যমের হাতে আসা ওই আবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকারের প্যাডে সংগঠনটির আহ্বায়ক বরাবর লেখা হয়েছে, আমরা সম্প্রতি আমাদের প্রাণের সংগঠনে বিভিন্ন একক গোষ্ঠীয় সিদ্ধান্ত, বিশৃঙ্খলা এবং আধিপত্য লক্ষ্য করছি যা সংগঠনের প্রকৃত উদ্দেশ্যের পরিপন্থী ও সংগঠনের জন্য হুমকি স্বরূপ। এমতাবস্থায়, আমরা ২১টি ইউনিট আমাদের সাংগঠনিক সব প্রকার কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দিচ্ছি এবং নিম্নোক্ত দাবিগুলো পেশ করছি।

আমরা আশা করি আপনি অতিসত্বর এই বিষয়ে লিখিতভাবে আপনার সিদ্ধান্ত জানাবেন এবং তা মনোপুত হলে আমরা পুনরায় কার্যক্রম শুরু করবো।

তৃণমূল এবং ত্যাগী নেতাদের দাবীসমূহ শিরোনামে দরখাস্তে ১০টি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে।

দাবিগুলো হলো:

১. যুব কমিটি স্থগিত করতে হবে এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে পুনরায় ভোট গ্রহণ করতে হবে।

২. একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করতে হবে যেখানে ৫০% থাকবে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এবং বাকি ৫০% থাকবে শাখা কমিটিগুলো থেকে। এই স্থায়ী কমিটি ছাত্র, যুব, প্রবাসী থেকে শুরু করে সকল অঙ্গ সংগঠন পরিচালনা করবে। যাতে সংগঠন এর শুরু থেকে কাজ করে আসা ত্যাগীরা পুরনো হয়ে গেলেও মূল্যায়ন পায় এবং সংগঠন এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক থাকে, স্বতন্ত্রত্য বজায় থাকে। অন্য কোন দল থেকে কেউ এসে যাতে সংগঠন ভিন্ন খাতে পরিচালনা না করতে পারে। ছাত্র, যুব এবং প্রবাসীসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিও এই স্থায়ী কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।

৩. অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গঠন গঠনতন্ত্র তৈরি করে তা প্রকাশ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা করতে হবে। গঠনতন্ত্র প্রকাশের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. সোহরাব হোসেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক মঞ্জুর মামুনকে মারতে আসা ও অশোভন আচরণ করার কারণে কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সোহরাবের মত হিংস্র গুণ্ডা স্টাইলের নেতাকে কোনভাবেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা শোভনীয় হবে না। প্রয়োজনে এই বিষয়ে ত্যাগীদের ভোট নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভোটাধিকার থাকতে হবে। শাখা গ্রুপে কেন্দ্রীয় নেতারা অধিপত্য দেখাতে পারবে না, তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের নিকট জবাবদিহি করবে। ভবিষ্যতে নির্বাচনে তৃণমূলকে মূল্যায়ন করতে হবে। জোর করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

৬. তৃণমূল পর্যায়ে যুব অধিকার পরিষদের প্রায় সকল কাজ ছাত্র অধিকার পরিষদ করছে। ছাত্রত্ব শেষে তাদের ত্যাগ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৭. সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে ব্যক্তি অনু্যায়ী আইন পরিবর্তন না করে সবার জন্য একই আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। ফেসবুকে সাংগঠনিক নিয়ে কটূক্তি, পদত্যাগ পত্র পোষ্ট করলে কাউকে দ্রুত সংগঠনে ফেরানো যাবে না। ফেরাতে হলেও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

৮. আর্থিক স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সকল আর্থিক হিসাব স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তের কাছে লিপিবদ্ধ থাকবে। কেউ এর বাইরে লেনদেন করলে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

৯. অন্য দল থেকে কেউ আসলে তার পদের ব্যাপারে নীতিমালা দিতে হবে। আমাদের মূল দল কিভাবে গঠিত হবে এটা আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক করতে হবে।

১০. সাংগঠনিক চ্যাটগ্রুপে মতের অমিল হলেই স্বৈরাচারের মতো কাউকে রিমুভ করা যাবে না এবং নেতাদের পছন্দসই কর্মীও এড করা যাবে না। নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকবে, সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।

দরখাস্তের শেষে লেখা হয়েছে, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে সকল ধরণের কার্যক্রম স্থগিত করা হবে অনির্দিষ্টকালের জন্য, প্রয়োজনে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ এর বিরুদ্ধচারণ করা ও ঢাবি কেন্দ্রীক সিন্ডিকেট করার সাথে জড়িত সকলকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।’

তবে এ ঘটনার পর নুরুল হক নুর জানান, আমাদের নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটা তারই অংশ। পুরনো সাক্ষর কপি করে এই ভুয়া দরখাস্ত তৈরি করা হয়েছে। এখানে যাদের সাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে তারা কেউ এই সাক্ষর করেননি।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কখনো ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকতে পারে না’
পরবর্তী নিবন্ধফেনীতে ধর্ষণ বিরোধী লংমার্চে হামলা, আহত ৮