খুবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মত চলছে শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট

খুবি প্রতিনিধি:
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২০ | ৮:০৭ অপরাহ্ণ | 162 বার পঠিত

বেতন ফি কমানো, আবাসন সংকট নিরসন, পরিক্ষার খাতায় কোডিং পদ্ধতি চালু, মুক্তচিন্তা বিকাশে সহায়ক অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে টানা দ্বিতীয় দিনের মত অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আজ ২ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে সমবেত হয়ে স্লোগান মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এর আগে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে সারারাত অবস্থান করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া তারা আজকে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত কয়েকবছরে বেতন ফি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা নতুন টার্ম রেজিষ্ট্রেশনের পূর্বেই বেতন – ফি সহনীয় মাত্রায় কমানোর দাবি জানান। এসময় রেজিষ্ট্রেশন ফি কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনা না হলে তারা রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে না বলে জানান।

আবাসন সংকট নিরসনে কত দিনের মধ্যে নতুন হল হবে তা লিখিত আকারে জানানোর পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণের আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হোস্টেল ব্যবস্থার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষার খাতা দ্বিতীয় পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন এবং প্রয়োজন অনুসারে তৃতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পরীক্ষার খাতায় কোডিং পদ্ধতি চালু করার দাবি জানান। এছাড়া সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও বিনোদন ব্যবস্থা আয়োজন ও ম্যাগাজিন, বুলেটিন, পোস্টার প্রকাশনায় শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানায়।

লাইব্রেরি সময়সীমা সকাল ৭ টা থেকে ১০ টা করে সপ্তাহে ৭ দিনই খোলা রাখার দাবি জানান। এছাড়া গল্প, উপন্যাস, জার্নাল, একাডেমিক গ্রন্থসহ সব ধরনের বই বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসক রাখার পাশাপাশি মেডিকেলে প্রয়োজনীয় সকল সরন্জাম কেনার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত ১৩ ই নভেম্বর উল্লিখিত এসব সমস্যা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর ২১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় তারা এ কর্মসূচির ডাক দেয়।

সর্বশেষ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে জরুরী ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

কমিটির সদস্যবৃন্দরা দ্বিতীয় দফায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে তদন্তের বিষয়ে সহযোগীতা চাইতে গেলে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাক্ষান করে আন্দোলন চালিয়ে যায়।

এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্কুলের ডিনরা এক প্রেস ব্রিফিং করেন। তারা বলেন অতি শীঘ্রই দুইটা ১০ তলা আবাসিক ভবনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে। তারা বলেন পরিবহন, বিদ্যুৎ খাতে ফি কমানোর জন্য সুপারিশ করা হবে। এছাড়া লাইব্রেরি কার্ড করার জন্য যে ফি দেওয়া লাগে সেটা উঠিয়ে নেওয়া হবে। তারা আরও বলেন দ্বিতীয় পরীক্ষা পদ্ধতিতে গেলে সেশনজটের আশঙ্কা রয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন উঠিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

এদিকে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য সরাসরি শিক্ষার্থীদের সামনে এসে লিখিত অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত তারা তাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

মুক্ত ক্যাম্পাস/রুবায়েত/জেডআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধট্রেনের ধাক্কায় দুই যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবিয়ের প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা