‘কেলেংকারি’ স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন বরিস

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি
বুধবার, ১২ জানুয়ারি ২০২২ | ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

‘কেলেংকারি’ স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। লকডাউনের সময় যখন হাজার হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছিলো কিংবা প্রিয় জনকে হারিয়ে আপনজনরা শোক স্তব্ধ তখন এসব কিছুই উপেক্ষা করে মদ্যপানের আসর বা পার্টিতে মেতে উঠেছিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বরিস জনসনের এমন কান্ড গত কিছুদিন ধরে আলোচনার মধ্যে থাকলেও সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ইমেইলের পর তা টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়। অবশেষে মদের পার্টিতে যোগদান নিয়ে প্রচণ্ড চাপের মুখে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন স্বীকার করলেন তিনি পার্টিতে যোগদান করেছেন। খবর বিবিসির

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরিস জনসন স্বীকার করেছেন তিনি সরকারি বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে ‘ব্রিং ইউর ওন বুজ’ বা ‘আপনার নিজের মদ আনুন’ পার্টিতে যোগদান করেছেন। বরিস বলেছেন, তিনি ২৫ মিনিটের জন্য পার্টিতে ছিলেন। আমি বৃটিশ জনগণের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী।

বুধবার পার্লামেন্টে বরিস বলেন, আমি বুঝি আমার নেতৃত্বের সরকারকে নিয়ে তারা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ, কেননা তারা ভাবছে যখন ডাউনিং স্ট্রিটে নিয়মগুলো যারা তৈরি করে তারাই তা সঠিকভাবে মানছে না। তবে বিরোধী দল তার পদত্যাগের যে দাবি করেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বরিস।

পার্লামেন্টে বরিস আরো বলেন, আমি ২০২০ সালের ২০ মে ওই গার্ডেনে সন্ধ্যা ৬ টার পর গেছিলাম স্টাফদের ধন্যবাদ দিতে। সেখানে তিনি ২৫ মিনিট অবস্থান করেন বলে জানান। এরপর তিনি তার কার্যালয়ে ফিরে যান তার কাজ চালিয়ে যেতে।

বিরোধী নেতা কেইর স্টারমার বলেন, জনসনের এখন অবশ্যই পদত্যাগ করা উচিত এবং জনগণ এখন ভাবে তিনি একজন মিথ্যাবাদী।

২০২০ সালে বরিস জনসন লকডাউন ভেঙ্গে যে পার্টি করেছেন সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক মেইলে এই তথ্য জানা গেছে। বৃটিশ আইটিভি এই মেইল প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই পার্টিতে অন্তত ১০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে সে দিন প্রায় ৪০ জন অংশ নেন। যাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং তার স্ত্রী ক্যারি সিমন্ডসও উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালের ২০ মে আয়োজন করা হয় ওই পার্টির। সে সময় দেশটিতে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করা নিষিদ্ধ ছিল।

আইটিভির খবর, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল প্রাইভেট সেক্রেটারি মার্টিন রেনল্ডস ডাউনিং স্ট্রিটের ওই পার্টিতে অংশ নিতে ১০০ এর বেশি জনকে মেইল করেন। এসবের মধ্যে রয়েছেন বরিসের উপদেষ্টা, বক্তৃতা লেখক এবং দরজার স্টাফ।

গত ১০ জানুয়ারী সোমবার ওই আয়োজন-সংক্রান্ত একটি ই-মেইল ফাঁস হলে এ তথ্য প্রকাশ্যে আসে। জানা যায়, ই-মেইলের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ আমলা মার্টিন রেনল্ডস অতিথিদের দাওয়াত করেছিলেন। যুক্তরাজ্য এখন করোনার অতিসংক্রামক অমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে লড়ছে। এর মধ্যে গত মাসে বড়দিনের উৎসবে একই ধরনের আয়োজন করে সমালোচিত হন বরিস জনসন।

লকডাউনের বিধি উপেক্ষা করে এমন আয়োজনের খবর প্রকাশ হওয়ার পর বরিস জনসন এ বিষয়ে আরেকজন জ্যেষ্ঠ আমলা সুয়ে গ্রেকে তদন্তের ভার দেন। একই সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে লন্ডন পুলিশ।

এদিকে বরিস জনসনের এমন পার্টির খবর প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে ২০২০ সালের ২০ মের সময় হাসপাতালের মধ্যে রোগীদের কি অবস্থায় ছিলো তার অনেক ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমগুলোতে।

প্রিয় পাঠক, শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ক সর্বশেষ আপডেট পেতে মুক্ত ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে লাইক দিন। লিঙ্ক : https://www.facebook.com/Muktocampus

পূর্ববর্তী নিবন্ধযাত্রী অর্ধেক হলেও বাড়ছে না বাসভাড়া
পরবর্তী নিবন্ধকিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু