কলিমউল্লাহর অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত: বেরোবি যাচ্ছে ইউজিসি প্রতিনিধি

এমসি রিপোর্ট
রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১ | ১২:২১ অপরাহ্ণ
বিজয় দিবসেও ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ভিসি কলিমুল্লাহ!

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে ৪৫টি অভিযোগ তদন্ত করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। আজ রবিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তে যাবেন তদন্ত দল।

ইউজিসির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। আর শিক্ষার্থীদের দাবি, উপাচার্যের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত হোক।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানসহ ৭ শিক্ষকের করা উপাচার্যের বিরুদ্ধে ৪৫ অভিযোগের সরেজমিন তদন্ত করতে আজ রংপুরে যাবে ইউজিসির তদন্ত কমিটি। এ নিয়ে ইউজিসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সাত শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে। এতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগের দালিলিক প্রমাণাদিসহ অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের উপস্থিত থাকার জন্য তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।

চিঠি পাওয়া ওই সাত শিক্ষক হলেন- বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কমলেশ চন্দ্র রায়, পরিষদের সম্পাদক এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এইচ এম তারিকুল ইসলাম, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খায়রুল কবির, লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ এবং অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন। এ ছাড়া উপাচার্যের একান্ত সচিবকেও চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনা ৪৫টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হয়েও অনুপস্থিত থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছামতো পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে একাডেমিক-প্রশাসনিক পদ দখল, ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন ইত্যাদি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, এই অভিযোগগুলোর তদন্ত হলে উপাচার্যের দুর্নীতি সবার কাছে আরও স্পষ্ট হবে। শিক্ষার্থীরাও চাইছে যেকোনো অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত।

এদিকে শনিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর দুর্নীতির ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বৃহৎ সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ নেতারা বলছেন এটি প্রথম খণ্ড। উপাচার্যের দুর্নীতিগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির ৪৫টি অভিযোগ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বরাবর পেশ করেছিলাম। তা এতোদিন পর তদন্ত দল তদন্ত করতে আসছেন। এ মর্মে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে আমাদের সাত শিক্ষককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ প্রমাণের মতো কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকব। এ ছাড়া উপাচার্যের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার ১১১ অভিযোগ সম্বলিত ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্রটির বিষয়ে তদন্ত দলকে জানানো হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবির সেই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ের চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে কেন্দ্র-নির্ধারণী স্কোর