প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিল দপ্তরি!

সিলেট প্রতিনিধি :
রবিবার, ২০ জুন ২০২১ | ১:১৮ অপরাহ্ণ
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিল দপ্তরি!

সিলেটের ওসমানীনগরের পাঠুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি আখতার হোসেন। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ১৬ জুন বুধবার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় দপ্তরি আখতার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে তা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

জানা যায়, উপজেলার গোয়ালাবাজার পাঠুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০৯ জন উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীর ২০২০ সালের (জুলাই-ডিসেম্বর) ৬ মাসের টাকা অভিভাবকদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট নগদে এসে জমা হয়। তার মধ্যে শিশু শ্রেণির জন্য ৪৫০ টাকা এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৯০০ টাকা হারে বৃত্তি পায় শিক্ষার্থীরা। নগদ একাউন্টে টাকা জমার পর পর বিদ্যালয়ে কর্মরত দপ্তরি আখতার হোসেন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মোবাইল নিয়ে নগদ অ্যাকাউন্ট থেকে উপবৃত্তির টাকাগুলো নিজ অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেন। পরে কাউকে অর্ধেক আবার কাউকে কোনো টাকা না দিয়েই কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এর প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় দপ্তরি নিজের দোষ স্বীকার করে আত্মসাৎকৃত টাকা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় তিনি প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে এ কাজটি করেছেন বলে দাবি করেন।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিবুল ইসলাম নাবিদের মা সজনা বেগম বলেন, আখতার বাড়িতে এসে আমার মোবাইলের নগদ অ্যাকাউন্ট চেক করে বলেন কোনো টাকা আসেনি। গত বছরও তিনি মোবাইল দেখে বলেছিলেন টাকা আসেনি। অথচ উপবৃত্তির শিটে আমার ছেলের নাম রয়েছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি রেজন মিয়া বলেন, আখতার প্রতারণার মাধ্যমে টাকাগুলো হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে এবং অনুষ্ঠিত বৈঠকে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। সে একাই কাজটি করেছে বলে জানালেও বৈঠকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জড়িত রয়েছেন বলে জানায়। বিষয়টি সত্য কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ুম বলেন, আখতার আমার বাড়িতে গিয়েও প্রতারণার চেষ্টা করেছে। সে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের মোবাইল থেকে টাকাগুলো ট্রান্সফার করে নেয়।

অভিযুক্ত আখতারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, গত ১৫ জুন মঙ্গলবার দুপুরে আখতারের এই অপকর্মের ব্যাপারে অবগত হই এবং ওইদিন রাতে সে আমার বাড়িতে এসে দোষ স্বীকার করে কান্নাকাটি করে। বুধবার সকালে বিষয়টি নিয়ে অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভায় শতাধিক অভিভাবক আখতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু উপস্থিত সময়ে আখতার নিজের অপকর্ম ঢাকতে আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করে, যা আমার জন্য হতাশাজনক।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফ মো. নেয়ামত উল্ল্যা বলেন, কয়েকজন অভিভাবকের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি। তবে কেউ এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখুবিতে সশরীরে মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে ইবি’র অফিসসমূহ