আরব আমিরাতে আশ্রয় নিলেন আশরাফ গানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বুধবার, ১৮ আগস্ট ২০২১ | ৯:২৭ অপরাহ্ণ
আরব আমিরাতে আশ্রয় নিলেন আশরাফ গানি

তালেবানের পুনরুত্থানে দেশত্যাগী আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি এর অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা অবশেষে কাটল। তিনি এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এটি নিশ্চিত করছে যে, মানবিক কারণে আশরাফ গানি ও তার পরিবারকে স্বাগত জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

এর আগে, গত রবিবার আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন আশরাফ গানি। পরে অবশ্য কিছু গণমাধ্যম দাবি করে, তাজিকিস্তান অনুমতি না দেওয়ায় ওমানে চলে গেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট। তার সঙ্গে স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও আফগানিস্তান ছেড়েছেন বলে শোনা যায়।

সম্ভাব্য দেশত্যাগীদের মধ্য আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহর নামও এসেছিল। তবে মঙ্গলবার এক টুইটে ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশ্চিত করেছেন, তিনি আফগানিস্তানেই রয়েছেন। পাশাপাশি, সংবিধান অনুসারে এই মুহূর্তে নিজেকে দেশটির বৈধ তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট বলেও দাবি করেছেন আমরুল্লাহ সালেহ।

ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশে থাকলেও পশ্চিমাসমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট যে পালিয়েছেন, তা নিশ্চিত। আর এ নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ আফগান নাগরিকদের একাংশ। তাদের কেউ কেউ আশরাফ গানিকে ‘কাপুরুষ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

গত রবিবার তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে ঢোকার পর আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান গনি। দেশ ছেড়ে তিনি কোথায় গেছেন বা কোন দেশে আছেন সে সম্পর্কে কয়েকদিনে অনেক জল ঘোলা হয়েছে।

গনির দেশত্যাগের পর প্রথম দিকে শোনা যায় তিনি আফগান সীমান্ত লাগোয়ো তাজিকিস্তানে গেছেন। পরে জানা যায় তিনি গেছেন উজবেকিস্তানে। এর পরদিন খবর আসে তাজিকিস্তান কিংবা উজবেকিস্তান নয় গনি চলে গেছেন ওমানে। তবে ওমান কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত না করায় গনি কোথায় গেছেন তা নিয়ে ধোয়াঁশা তৈরি হয়।

তালেবান রাজধানী কাবুলে প্রবেশের পর আশরাফ গনি চারটি গাড়ি ও হেলিকপ্টার ভর্তি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। সেই সময় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম আফগান এই প্রেসিডেন্ট প্রথমে তাজিকিস্তানে পরে ওমানে চলে গেছেন বলে খবর দেয়।

২০১৪ সাল থেকে আফগান প্রেসিডেন্ট গনির এমন পলায়ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা পালিয়ে যাওয়ার জন্য তার সমালোচনা করেছেন। অনেকে বলছেন, ওইদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা বলে গনি পালিয়ে যান।

গনি পালানোর সময় চারটি গাড়ি ও হেলিকপ্টারে করে বিপুল পরিমাণ অর্থও নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাস। দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ এই তথ্য জানায়।

কাবুলে রাশিয়া দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কো বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তি ছিল চারটি গাড়ি, তাছাড়া একটি হেলিকপ্টারেও অর্থের একটি অংশ তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জায়গা না হওয়ায় অনেক অর্থ টারমার্কে ফেলে যায়।’

দেশের মানুষকে তালেবানের হুমকির মধ্যে ফেলে দেশ ছাড়ার পর আশরাফ গনি এক ফেসবুক পোস্টে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছিলেন, ‘স্বদেশিদের মধ্যে রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া তার হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তাগিদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা প্রতিরোধী বুথ স্থাপন