অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্য জাবি!

নাহরাইন জান্নাত, জাবি
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ | 394 বার পঠিত

ঝতুচক্রের আবর্তে এদেশে আসে শীত। হেমন্তের ফসলভরা মাঠ যখন শূন্য হয়ে পড়ে, তখনই বুঝা যায় ঘন কুয়াশার চাঁদর মুড়ি দিয়ে আসছে শীত।তবে শহরে শীতের সেই আমেজ নেই।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতের আগমন ঘটে ভিন্নভাবে। শহুরে কৃত্রিমতাকে ছাড়িয়ে প্রকৃতির এই সবুজ সমারোহে শীতের বার্তা নিয়ে আসে অতিথি পাখিরা। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নেপাল, চীন, ইংল্যান্ডের নর্থ হ্যামশায়ার, সাইবেরিয়া কিংবা এন্টার্কটিকার বরফ শুভ্র হিমালয় এবং মেঘালয় থেকেই বেশির ভাগ অতিথি পাখির আগমন ঘটে।

তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে ছুটে আসা এই পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ের নাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ প্রকৃতির মাঝে ফুটে থাকা লাল শাপলা পরম উষ্ণতায় বরণ করে নেয় এই অতিথিদের।

প্রতি বছরের মত এবারও অক্টোবরের শেষের দিকেই খাদ্য আর নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে শুরু করেছে এসব পরিযায়ী পাখি, থাকবে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত। বর্তমানে প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের লেকটি লিজমুক্ত রয়েছে। যার কারণে অধিকাংশ পাখি এই লেকগুলোতে দেখা যাচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যা পাখির কলকাকলিতে মুখর জাবি ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীশূন্য নির্জন ক্যাম্পাসকে ভরিয়ে তুলেছে প্রাণের স্পন্দনে। আজ তারা যেন এই সবুজ রাজত্বের একমাত্র উত্তরাধিকারি হয়ে উঠেছ ঘন কুয়াশার বুক ভেদ করে আলোর রেখা ফুটতে না ফুটতেই শিশিরসিক্ত লাল শাপলার সাথে লেকের পানিতে লুকোচুরি খেলায় মেতে ওঠে তারা। এদের অধিকাংশ হাঁস জাতীয়। আবার কিছু প্রজাতির পাখিকে গাছের ডালে কিংবা ডাঙায় বসে শীতের মিষ্টি রোদ উপভোগ করতে দেখা যায়। যা মুগ্ধ করে চলেছে দর্শনার্থীদের। তাই প্রতিনিয়ত বাড়ছে পাখিপ্রেমীদের আনাগোনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাশয় গুলোতে ১৯৮৬ সাল থেকে পরিযায়ী পাখি আসছে। এখন পর্যন্ত ২০৪ প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি দেখা গেছে এখানে।তার মধ্যে ১২৬ টি দেশি ও ৭৮ টি বিদেশি প্রজাতি।নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যের মাত্রাকে আরেকটু বাড়িয়ে দিতেই যেন এই অতিথিরা ছুটে এসেছে দূর-দূরান্ত থেকে। তাদের প্রাণোচ্ছল পদচারণে ক্যাম্পাস পরিণত হয়েছে স্বর্গভূমিতে। অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখর জাবি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে প্রতিদিন ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা।

মুক্ত ক্যাম্পাস/নাহরাইন/জেডআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক বাংলাদেশ সমাচারে পাবনা প্রতিনিধি হলেন তুহিন