করোনার বিরুদ্ধে লড়তে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কার্যকর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০ | ১০:২৪ অপরাহ্ণ
করোনার বিরুদ্ধে লড়তে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কার্যকর

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর ও এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ তিন মাস ধরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর পর মানবদেহে এটির কার্যকারিতা প্রমাণ পেলো।

ট্রায়ালে ১ হাজার ৭৭ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখা গেছে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি এবং শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি হয় যা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গবেষকদের এই পর্যবেক্ষণকে অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল বলে দেখা হচ্ছে।

আজ সোমবার (২০ জুলাই) বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত প্রথম ধাপের পরীক্ষার ফলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

করোনার বিরুদ্ধে লড়তে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কার্যকর

এটি নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সুরক্ষা দেবে কিনা তা যাচাই করতে আরো বড় আকারের ট্রায়ালের দরকার হতে পারে।

তবে যুক্তরাজ্য সরকার এরই মধ্যে এই ভ্যাকসিনের ১০০ মিলিয়ন ডোজের অর্ডার দিয়ে রেখেছে।

গবেষণা দলের প্রধান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অ্যান্ড্রিউ পোলার্ড বলেন, আমরা আশা করছি এই ফলাফলের অর্থ হলো শরীরের ইমিউন ব্যবস্থা ভাইরাসটিকে চিহ্নিত করতে পারবে এবং আমাদের ভ্যাকসিন মানুষকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সুরক্ষা দেবে।

বিশ্বের দুই শতাধিক ভ্যাকসিন উদ্ভাবন প্রচেষ্টার মধ্যে যে ১৪টি মানুষের শরীরে ট্রায়াল করা হয়েছে তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডার্না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে, ভ্যাকসিন তৈরিতে অক্সফোর্ডই সবথেকে এগিয়ে রয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনেক বেশি আশাব্যঞ্জক। তবে এখনই তা পর্যাপ্ত সুরক্ষা দেবে কিনা তা বলার সময় হয়নি। কারণ বড় ধরনের পরীক্ষা চলমান রয়েছে।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন গবেষণার নেতৃত্বে থাকা অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলেন, আমাদের ভ্যাকসিনটি মহামারি ঠেকাতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত হতে আরও অনেক কাজ বাকি আছে। কিন্তু প্রথম ধাপের পরীক্ষার ফল আশাব্যঞ্জক।

অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিনের কোড নাম ChAdOx1 nCoV-19। ভ্যাকসিনের ইতিহাসে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে রেকর্ড পরিমান কম সময়ে এই ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করা হয়েছে।

শিম্পাঞ্জির সাধারণ সর্দি কাশির জন্য দায়ী একটি ভাইরাসকে জিনগতভাবে পরিবর্তন করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

এই ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে কোনো সংক্রমণ ঘটাবে না এবং ভাইরাসটির জিনগত পরিবর্তন সাধন করে নভেল করোনাভাইরাসের কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের একটি নতুন ভাইরাসে রূপান্তর করা হয়েছে।

অর্থাৎ এই ভ্যাকসিন মূলত করোনাভাইরাসের মতোই একটি জীবাণু কিন্তু সংক্রমণে সক্ষম নয়। ফলে এটি করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাসের বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিরোধ গড়তে হবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সে বিষয়ে প্রশিক্ষিত করে তুলতে সহায়তা করবে। বিবিসি

মুক্ত ক্যাম্পাস/জেডআর

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামী বন্দুকযুদ্ধে নিহত
পরবর্তী নিবন্ধঅকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, যবিপ্রবির কর্মকর্তার কক্ষ ভাংচুরের অভিযোগ